প্রতিনিধি ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ , ৯:৪১:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
নবিজুল ইসলাম নবীন,নীলফামারী প্রতিনিধি,
নীলফামারীতে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পড়ালেখা চালাতে পারছে না শারীরিক প্রতিবন্ধী মোঃ ফরিদুল ইসলাম। সে নীলফামারী চাঁদের হাট ডিগ্রী কলেজে ইতিহাস বিভাগে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
পারিবারিক অস্বচ্ছলতার মধ্য উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করলেও উচ্চ শিক্ষার জন্য অনার্স পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তার জন্য দুঃসহ হয়ে উঠেছে। ফরিদুল নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বিশমুড়ী চাঁদের হাট পাইলাভাঙ্গা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, ‘জন্মের পরে পায়ের সমস্যা নিয়ে ফরিদুল ইসলামের জন্ম হয়। জন্মের ৪ বছর পর হঠাৎ করে কানের সমস্যা হয়। তারপর থেকে কানেও কম শুনে। কানে কম শুনা ও পায়ের সমস্যার কারনে স্বাভাবিক ভাবে কোনো কাজ করতে পারে না ফরিদুল। মোঃ ফরিদুল ইসলামের পিতা মোঃ রফিকুল ইসলাম একজন দিন মুজর। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে।
সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই। আছে শুধু মাথা গোজার ঠাই। অনেক কষ্টে চলে তাদের সংসার। অনেক কষ্টে বিয়ে দিয়েছেন দুই মেয়েকে। আরেক ছেলেও পড়ছে হাফিজিয়া মাদরাসায় হেফজ বিভাগে। কষ্ট করে হলেও বাবা রফিকুল ইসলাম তার সন্তান ফরিদুলের পড়াশোনা করাচ্ছেন। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি সহ নানা কারণে ফরিদুলের পড়াশোনা চালানো তার জন্য দুঃসহ হয়ে উঠেছে।’
ফরিদুল ইসলামের পিতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন গরীব মানুষ। সহায় সম্বল বলতে কিছু নাই। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলাতে খুব কষ্ট হয়। আমার ছেলে টা পড়াশোনায় অনেক ভাল স্যার বলেছে। তাই তাকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাচ্ছি। আমারও স্বপ্ন ছেলে টা উচ্চ শিক্ষা অর্জন করুক। কিন্তু টাকার অভাবে তা মনে হয় আর সম্ভব হবে না।’
ফরিদুল ইসলামের প্রাইভেট শিক্ষক শাইখুল ইসলাম বলেন, ‘৪র্থ ও ৫ম শ্রেনীতে আমার কাছে যখন ফরিদুল প্রাইভেট পড়ত তখন থেকেই সে কানে কম শুনত। আমি যখন সকল শিক্ষার্থীদের অঙ্ক বুঝাতাম তখন ভাবতাম ফরিদুলকে কিভাবে অঙ্ক গুলো বুঝবে।
কিন্তু দেখলাম স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে সে অনেক ভালভাবে অঙ্ক গুলো বুঝত। তাকে একাধিক বার কোন বিষয় দেখে দিতে হয়নি। সে নিজের চেষ্টায় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি তার একজন শিক্ষক হিসেবে চাই ফরিদুল ইসলাম উচ্চ শিক্ষা অর্জন করুক এবং উচ্চ শিক্ষা।