প্রতিনিধি ১৭ অক্টোবর ২০২২ , ৩:৫১:০৭ প্রিন্ট সংস্করণ
আজিজ উদ্দিন।।
আজ সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহুল আলোচিত কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচন। গতরাত থেকে নির্বাচন কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশনের নিয়োজিত কর্মকর্তারা।
এবারের নির্বাচনে ৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোটর প্রদান করবে ৯৯৪ জন ভোটার। ভোট গ্রহণ চলবে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। আর ভোট গ্রহন হবে ইভিএম এ। তাই ইতিপূর্বে ভোটারদের ইভিএম এ ভোট প্রদানের নিয়ম বিষয়েও জানানোর জন্য ডেমি ভোট গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন অফিসার।
ইতিমধ্যে জেলাব্যাপী ব্যাপক উত্তাপ ছড়ানো জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে করতে ব্যাপক হারে পুলিশ, র ্যাব, আনসার ও ম্যাজিস্ট্রেট সহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন অফিসার।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ সাহাদাত হোসাইন বলেছেন, আজ ১৭ অক্টোবর (সোমবার) বহুল প্রত্যাশিত কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে প্রশাসনিক এবং আইন শৃংখলা উভয় দিকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহন চলবে।
ভোট কেন্দ্রে কোন ধরণের বিশৃংখলা করলে সাথে সাথে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ভোট গ্রহন করা হবে ইভিএম এ। তাই অনেকে ইভিএম এ যদি অভ্যস্থ না হয়ে সে জন্য প্রতিটি উপজেলায় আগে থেকে ডেমি ভোট নিয়ে অভ্যস্থ করা হয়েছে ভোটারদের।
কক্সবাজার সদর উপজেলার ভোট গ্রহন করা হবে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে, ঈদগাঁও উপজেলার ভোট গ্রহন করা হবে ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে, কুতুবদিয়া উপজেলার ভোটগ্রহন করা হবে কুতুবদিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। এছাড়া বাকি ৫ উপজেলার ভোটর গ্রহন করা হবে স্ব স্ব উপজেলা পরিষদ হল রুমে। ভোটাররা যাতে নিরাপদে ভোট দিতে পারেন সে জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ম্যাজিস্ট্রেটসহ উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তারা থাকবেন।
এদিকে জেলা পরিষদের নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার ও কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ রবিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কাজ নির্বাচনকে সুষ্ট করা। কোন প্রার্থী আমাদের বিশেষ পছন্দের না তবে সবাই আমাদের পছন্দের। ভোটররা যাতে যোগ্য মনে করবে তাকেই ভোট দেবে। আমার পক্ষ থেকে একটু বলতে পারি একটি অবাধ সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় নির্বাচনের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়ে মুঠেফোনে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তাক আহামদ চৌধুরী বলেন, আমার বিশ্বাস ভোটাররা যোগ্য লোককে বেছে নেবে। সামান্য টাকার কাছে কেউ বিক্রি হবে না। পরবর্তীতে মার খেতে হয় এমন প্রার্থীকে কেউ ভোট দেবে না। আমি জয়ে ব্যাপারে অবশ্যই আশাবাদী।
অপর প্রার্থী শাহিনুল হক মার্শাল বলেন, আমার জয় শতভাগ নিশ্চিত। এখন আমাকে কিভাবে হারানো যায় সেই পরিকল্পনা চলবে সবখানে। তাই ভোটার এবং জনগনকে আমি সতর্ক এবং সজাগ থাকার আহবান জানাচ্ছি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৪৭জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। তৎমধ্যে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী পেয়েছেন মোটর সাইকেল, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান নুরুল আবছার পেয়েছেন তালগাছ, শাহীনুল হক মার্শাল পেয়েছেন আনারস এবং মঙ্গল পার্টি নেতা জগদিশ বড়ুয়া প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সংরক্ষিত সদস্য পদে ১নং ওর্য়াড থেকে জেলা পরিষদ সদস্য উখিয়ার হলদিয়া পালং আওয়ামী লীগের সভাপতি আশরাফ জাহান কাজল (দোয়াত কলম), তছলিমা আক্তার রুমানা (টেবিলঘড়ি), তাছলিমা আক্তার (ফুটবল)। ২নং ওর্য়াড থেকে মশরফা জান্নাত (বই), চম্পা উদ্দিন (টেবিল ঘড়ি), সালেহা আক্তার আখি (ফুটবল), হুমাইরা বেগম (হরিণ) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। ৩নং ওয়ার্ড থেকে আসমা উল হুসনা- (টেবিল ঘড়ি), তানিয়া আফরিন (দোয়াত কলম), রেহেনা খানম (ফুটবল) এবং হুমাইরা বেগম (বই) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
সাধারণ সদস্য পদে ১নং ওয়ার্ড থেকে জাফর আলম (তালা), মোঃ শফিক মিয়া (টিউবওয়েল)। ২নং ওর্য়াড থেকে আবুল মনসুর চৌধুরী (টিউবওয়েল), হুমায়ুন কবির চৌধুরী (তালা)। ৩নং ওয়ার্ড থেকে মাহমুদুল করিম মাদু (হাতি), তাহমিনা জাহান লুনা (তালা), মোঃ রুহুল আমিন (অটোরিক্সা)।
৪নং ওয়ার্ড থেকে ফরিদুল আলম (হাতি), শামসুল আলম মন্ডল (তালা), মোস্তাক আহমদ (অটোরিক্সা), নুরুল আবছার (ঘুড়ি), মোঃ মনজুরুল মুর্শেদ কাদের (বৈদ্যুতিক পাখা), মোঃ আবদুল মজিদ (টিউবওয়েল)। ৫নং ওয়ার্ডে আরিফুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৬ নং ওয়ার্ড থেকে সোলতান আহমেদ (ঘুড়ি), মুহাম্মদ ফয়সাল (হাতি), মোঃ আবু তৈয়ব (টিউবওয়েল), মোঃ জাহাঙ্গির আলম (তালা), এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী জিয়া (বৈদ্যুতিক পাখা)। ৭নং ওয়ার্ডে মোঃ আবদুল হামিদ (ক্রিকেট ব্যাট), মোঃ জয়নাল আবেদীন (হাতি), সোলতান মোহাম্মদ রিপন (ঢোল), নুরুল আবছার (বৈদ্যুতিক পাখা), সেলিনা আক্তার (উটপাখি), মোহাম্মদ আজমগীর (টিউবওয়েল)।
৮ নং ওয়ার্ডে এম. আজিজুর রহমান (তালা, শহীদুল ইসলাম মুন্না (হাতি), মোঃ সাইফুল কাদির (টিউবওয়েল)। ৯নং ওয়ার্ডে কফিল উদ্দিন (তালা), আবু জাফর ছিদ্দিকী (হাতি), ছরওয়ার আলম সিকদার (ঘুড়ি), এবং নুরুল ইসলাম (টিউবওয়েল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
উল্লেখ্য, ৯টি উপজেলার ৭১ ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভায় উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা টেকনাফ উপজেলা ৯৩ জন, উখিয়া উপজেলা ৬৮ জন, সদর উপজেলা ৮২ জন, রামু উপজেলা ১৪৫ জন, ঈদগাঁও উপজেলা ৬৫ জন,
চকরিয়া উপজেলা ২৪৯ জন, পেকুয়া উপজেলা ৯৪ জন, মহেশখালী উপজেলা ১১৭ জন, কুতুবদিয়া উপজেলা ৮১ জন সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৯৯৪ জন।