• সারাদেশ

    কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বসবে সম্প্রীতির মিলনমেলা, আজ বিজয় দশমী

      প্রতিনিধি ৫ অক্টোবর ২০২২ , ৫:৫০:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    আজিজ উদ্দিন।।

    কক্সবাজার জেলায় ৫দিনব্যাপী শারদীয় অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আজ বুধবার সমাপ্ত হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। বিজয়া দশর্মী উপলক্ষে নেয়া হয়েছে জেলাব্যাপী নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা। বিসর্জন দেয়া হচ্ছে কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্টে। বিসর্জন উপলক্ষে সৈকতে লাখো পর্যটক ও ভক্তদের ঢল নামবে বলে আশা করছেন আয়োজক ও ব্যবসায়ীক সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও জেলার চকরিয়া মাতামুহুরীতে, রামুর বাঁকখালীতে, কুতুবদিয়া সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিজর্সন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

    এদিকে বিসর্জন অনুষ্ঠানে লাখো পর্যটক ও ভক্তদের
    সমাগম হবে বলে ধারণা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট। কেননা, আজ বিজয়া দশমী উপলক্ষে সরকারি বন্ধ। কাল বৃহস্পতিবার একদিন পর শুক্রবার, শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং রবিবার মহরমের বন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে বৃহস্পতিবার ঐচ্ছিক ছুটি নিয়ে একটানা ৫দিন ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে কক্সবাজারে আসছেন বলে ধারণা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট।

    অনেক ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকরা জানান, ইতিমধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে রুম বুকিংও নিশ্চিত করেছেন অনেকে। যারা বুকিং করেছে তারা ৪/৫ দিন পর্যন্ত অবকাশে থাকবে কক্সবাজারে। এই আমরা আশাবাদী বিসর্জনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটবে।

    জানা গেছে, গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় শারদীয়া দুর্গাপুজা। ১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ২ অক্টোবর সপ্তমী, ৩ অক্টোবর অষ্টমী, ৪ অক্টোবর নবমী ও ৫ অক্টোবর দশমীর মধ্যদিয়ে আজ সমাপ্ত হচ্ছে ৫ দিনব্যাপী শারদীয় উৎসব। জেলায় প্রতিমাপুজার সংখ্যা ছিল ১৪৮টি ও ঘটপুজার সংখ্যা ছিল ১৫৮টি।

    জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, কক্সবাজারে সদর উপজেলায় ২৮টি, ঈদগাঁও উপজেলায় ২৬টি, কক্সবাজার পৌরসভায় ২১টি, রামু উপজেলায় ৩২টি, চকরিয়া উপজেলায় (চকরিয়া পৌরসভাসহ) ৯২টি, পেকুয়া উপজেলায় ৯টি, কুতুবদিয়া উপজেলায় ৪৫টি, মহেশখালী উপজেলায় (মহেশখালী পৌরসভাসহ) ৩১টি, উখিয়া উপজেলায় (রোহিঙ্গা ক্যাম্প সহ) ১৬টি, টেকনাফ উপজেলায় ৬টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া। আজ শেষ অনুষ্ঠান হবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। এখানে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিমা আনা হবে সংশ্লিষ্ট মন্ডপ থেকে। তাই শেষভালটার আশা করছি আমরা।

    জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর জানান, এবার জেলায় নির্বিঘ্নে পুজো অনুিষ্ঠত হয়েছে। পুজোর প্রতিটা দিন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করতে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ট্যুরিষ্ট পুলিশ প্রশাসন সহ সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় ভালভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়ায় পুজা অনুষ্ঠিত হওয়ায় আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। উজ্জ্বল কর আরো জানান, নবমীর দিন জেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিয়ষক অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. ফরিদুল ইসলাম চৌং, সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম প্রমূক।

    এদিকে ট্যুরিষ্ট পুলিশ সুপার মোঃ জিল্লুর রহমান বাংলাদেশের বার্তার কক্সবাজার প্রতিনিধি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার রোধে বিশেষ মনিটরিং এ আছে জেলা পুলিশ ও ট্যুরিষ্ট পুলিশ কক্সবাজার। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। পুজাকে কেন্দ্র করে কিছু লোক সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য ও ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে। যার ফলে সাম্প্রদায়িক ভুল বোঝা-বুঝির সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরনের সকল অপপ্রচার রোধে জেলা পুলিশ, কক্সবাজারের একটি বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং এ আছে। যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পূজাকে কেন্দ্র করে এধরনের অপপ্রচারে লিপ্ত হন তবে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনো বিদ্যমান। ইতিমধ্যে ২১ ম্যাজিষ্ট্রেট মাঠপর্যায়ে থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আজকেও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিমা বিসর্জন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্তরা মাঠে থাকবে।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ