প্রতিনিধি ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ৭:১৬:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ
আজিজ উদ্দিন।।
কক্সবাজারে গত ২৭সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে শুরু হয়েছে বীচ কার্নিভাল ও পর্যটন মেলা। পর্যটন দিবস পালন করার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সপ্তাহব্যাপী বীচ কার্নিভাল ও পর্যটন মেলার।
সে সাথে বিশ্ব পর্যটন দিবস স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রশাসন থেকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার জন্য হোটেল মোটেল মালিক সমিতি, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, ঝিনুক ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতি, বীচ বাইক মালিক সমিতি, কিটকট মালিক সমিতি, ওয়াটার বাইক মালিক সমিতি, ফটোগ্রাফার কল্যাণ সমিতি, হকার ব্যবসায়ী সমিতি, চটপটি ব্যবসায়ী সমিতি, ফ্রাই ফিস সমিতির নেতৃবৃন্ধের সাথে প্রশাসন দফায় দফায় বৈঠক হয়।
চুড়ান্ত বৈঠকে বিভিন্ন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে বিশ্ব পর্যটন দিবসটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য হোটেল মোটেল জোনের সকল প্রকার ব্যবসায়ীরা সপ্তাহব্যাপী ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দেন।
তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলো হোটেল মোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক ব্যবসায়ী সমিতির দেয়া ছাড়।
রেস্তোরেন্ট মালিক সমিতির পক্ষে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির উপদেষ্টা আবুল কাশেম বলেন, হোটেল মোটেলের পাশাপাশি কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোনের সকল রেস্তোরাঁতে ১৫% ছাড় দেওয়া হবে। এতে সম্মতি জানিয়ে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমরা আমাদের উপদেষ্টার প্রস্তাবে রাজি আছি এবং তিনি তখন সকল রেস্তোরাঁ মালিকদের প্রতি আহবান জানান বিশ্ব পর্যটন দিবসে যেন সবাই সঠিক নিয়মে ১৫% ছাড় দেন।
প্রশাসনও তাঁদের কথায় সকল রেস্তোরাঁ মালিকদের বলেন তা যেন যথাযথ ভাবে মেনে চলতে।
কিন্তু প্রশাসন ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত হাতে গুনা কয়েকটা রেস্তোরাঁ ছাড়া বাকি গুলো মানছেন না।
এমনটা অভিযোগ করে ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা শাহিন নামের একজন পর্যটক বলেন, বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ছাড় দেওয়া হবে জেনে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি।
যেইদিন মেলা উদ্বোধন হলো সেদিন হান্ডিতে পরিবার নিয়ে খেতে গেছি। খাওয়ার পরে বিল দিতে গিয়ে দেখি বিলে কোন ছাড় নেই। হান্ডির ম্যানেজারের সাথে তর্কের একপর্যায়ে আমার হাতে থাকা কম্পিউটারের বিলটি নিয়ে কলমে ছাড় লিখে দিয়ে বাকি টাকা নেয়।
কাচ্চি ডাইনে খেতে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পর্যটক বলেন, আমরা গতকাল দুপুরে কাচ্চি ডাইনে খেয়ে বিল দিতে গিয়ে দেখি বিলে ছাড় দেওয়ার কোন অপশন নেই। তখন কাচ্চি ডাইনের ক্যাশ কাউন্টারে বিষয়টি অবগত করলে তারা বলেন, আমাদের কৃতপক্ষ এইসব ছাড়ের বিষয়ে কিছুই জানে না। তাই আমরা ছাড় দিতে পারব না।
ক্যাশ কাউন্টারের কথা শুনে বিলে যা আসছে তা পরিশোধ করে চলে আসি।
কলাতলী ডলফিন মোড়ে ওয়ার্ল্ড বীচ রিসোর্টে অবস্থিত পউষীতে গাজিপুর থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, আমরা তিনজন দুপুরে খাবার খেয়েছি পউষীতে। খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ করতে গেলে দেখি, বিলের মধ্যে কোন ছাড় নেই। পউষী’র ক্যাশ ম্যানেজারকে বললে, তিনি বলেন আমাদেরকে ছাড়ের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।
তাই আমরা দুঃখিত আপনাদের ছাড় দিতে পারছি না। হোটেল মোটেল জোনে প্রায় শতাধিক রেস্তোরাঁ আছে, তাদের মধ্যে যদি কয়েকটা ছাড়া বাকি গুলো এমন ছাড় না দেয়, তাহলে পর্যটকরা কি স্মরণীয় করে রাখবে এমনটা চিন্তাভাবনা করছে সুশীলজনেরা।
তাঁরা আরো বলছেন, ছাড় দিবো বলে খাবার প্রাইজের দাম বাড়িয়ে দিয়ে ছাড় দিচ্ছে। মেলায় প্রাঙ্গনে অবস্থিত শালিকে একটি গরুর নলা বিক্রি করতেছে পাঁচশত টাকায়।
প্রশাসনের নাকের ডগায় যদি এমন চড়া দাম নিয়ে পণ্য বিক্রি করে তাহলে পর্যটন সপ্তাহ, বীচ কার্নিভাল ও পর্যটন মেলা মনে রাখবে বলে মনে হয় না এমনটা বলছেন পর্যটক বিশ্লেষকরা।
এইচ/কে