• আন্তর্জাতিক

    প্রত্যেক হামাস সদস্যের ‘মৃত্যু পরোয়ানা’ ইসরায়েল প্রধানমন্ত্রীর

      প্রতিনিধি ১২ অক্টোবর ২০২৩ , ২:৪২:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক। 

    ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ ষষ্ঠ দিনে গড়িয়েছে। এই যুদ্ধ উভয় দেশেই প্রায় ২৩ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এই অবস্থায় হামাসের ঘাঁটি বলে পরিচিত গাজায় অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

    পাশাপাশি এই অভিযানে প্রত্যেক হামাস সদস্যের ‘মৃত্যু পরোয়ানা’ ঘোষণা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গোষ্ঠীটির সব সদস্যকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

    তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে।ইসরায়েলের সেই ঘোষণার পর দেশটির বিমানবাহিনী গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা চালায়। এসব হামলায় প্রাণহানি প্রায় ১১ শ ছাড়িয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গাজার।

    এই অবস্থায় গাজায় স্থল অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এখনো বিষয়টি প্রস্তুতি পর্যায়ে রয়েছে। তবে এই স্থল অভিযানে হামাসের প্রতিটি সদস্যকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

    গতকাল বুধবার হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মাঝে জাতীয় সরকার গঠনে ঐকমত্যে পৌঁছে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন জোট ও বিরোধীরা। কয়েক ঘণ্টার দীর্ঘ আলোচনার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও বিরোধীদলীয় নেতা বেনি গান্তেজ জাতীয় সরকার গঠনে রাজি হন। পরে সন্ধ্যার দিকে দেওয়া এক ভাষণে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রত্যেক হামাস সদস্যকে মৃত দেখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘প্রত্যেক হামাস সদস্যই (আমার চোখে) মৃত ব্যক্তি বা ডেড ম্যান।’ সাধারণত পশ্চিমা বিশ্বে প্রাচীন আমলে প্রতিপক্ষকে হত্যা করার হুমকি দিতে এই ডেড ম্যান শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হতো। গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে চলমান ‍যুদ্ধের সমর্থনে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী সিরিয়া থেকেও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সিরিয়া থেকে মর্টার হামলার জবাবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সিরিয়ার সীমান্তের ভেতরে কামান ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করেছে।

    ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশী সিরিয়া থেকে ছোড়া কামানের গোলা ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হেনেছে। এর জবাবে সামরিক বাহিনী সিরিয়ার ভূখণ্ড লক্ষ্য করে পাল্টা কামান ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করা হয়েছে। সিরিয়ার একটি সূত্র বলেছে, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর একটি শাখা ইসরায়েলে অন্তত তিনটি রকেট নিক্ষেপ করেছে।

    হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের মাঝে দুই প্রতিবেশী লেবানন ও সিরিয়া থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে এই ধরনের হামলায় পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত শনিবার হামাসের হামলা শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর সদস্যরা। মঙ্গলবার সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে হিজবুল্লাহর প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় হিজবুল্লাহর তিন সদস্য ও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক ডেপুটি কমান্ডার নিহত হন। এ ছাড়া হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল সংঘাতে আরও দুই বেসামরিকের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে লেবানন।

    ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের সৈন্যরা সিরিয়ায় উৎক্ষেপণ উৎস লক্ষ্য করে কামান ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করেছে। তবে এই হামলা-পাল্টা হামলায় কোনো হতাহতের খবর তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ