প্রতিনিধি ২২ আগস্ট ২০২৩ , ২:০২:৫২ প্রিন্ট সংস্করণ
আব্দুর রহমান ঈশান,নেত্রকোণা প্রতিনিধি।
নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার অতিথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা রায়হান মুমি বিনা অনুমতিতে ১৭ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
এরমধ্যে কয়েক দফা নিজেকে অসুস্থ্ দাবি করে চিকিৎসার জন্য ছুটির আবেদন পাঠালেও তা গ্রহণ করেনি শিক্ষা অধিদফতর। পরে চলতি বছরের আগষ্টে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কর্র্তৃপক্ষ।
মুমি বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষিকা। তার অনুপস্থিতিতে বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমকি শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থী ঝরে গেছে অর্ধেকের বেশি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে চিকিৎসাজনিত কারণ দেখিয়ে তিন মাসের ছুটি নেন সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা রায়হান মুমি। পরে ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। থাকেন স্বামীর সঙ্গে রাজধানীতে। এরমধ্যে দুই তিন মাস পরপর কয়েক দফা অসুস্থ্ দেখিয়ে ছুটির আবেদন করেছেন মুমি। কিন্তু ছুটি মঞ্জুর না হলেও তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। তবে অনুপস্থিত থাকায় তার বেতন বন্ধ রয়েছে। পরে গত জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ে গত বছরে প্রাক-প্রাথমিকে ৪০-৫০ শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে ২০-২২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শ্রেণি শিক্ষক না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ঝরে গেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ে অন্যান্য শিক্ষক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষিকা মুর্শিদা রায়হান মুমি স্বামীর সঙ্গে রাজধানীতে থাকেন। রাজধানী শহরে পোল্টির বড় ব্যবসা রয়েছে তার স্বামীর। মুমি সম্পূর্ণ সুস্থ্, তার কোনো অসুখ নেই। আর্থিক কোনো সমস্যা না থাকায় চাকরি নিয়ে তার তেমন কোনো মাথা ব্যাথা নেই।
প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুমি প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষিকা। এ বিষয়ে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তার অনুপস্থিতিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থী কমে গেছে। মুমির অবর্তমানে অন্য শিক্ষকরা যে যখন ফ্রি থাকেন সময় সুযোগ মতো প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির পাঠদান করাচ্ছেন। অনুপস্থিত থাকায় মুমির বেতন বন্ধ রয়েছে। তবে তার অনপুস্থিতিতে প্রাক-প্রাথমিকের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ওই অনেকবার চিকিৎসা ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন মুমি। কিন্তু তার এসব আবেদন গ্রহণ হয়নি। এ বিষয়ে মুমির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
সোমবার (২১ আগষ্ট) দুপুরে এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষিকা মুর্শিদা রায়হান মুমি’র ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বারহাট্টা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষিকা মুমি বারবার অসুস্থতার বিষয়ে ছুটি চেয়ে আবদেন করে পাঠিয়েছেন সেগুলো প্রধান শিক্ষক নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। সেগুলো তার উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া উচিত ছিল। তবে এ ঘটনায় ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে গেছেন। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নেবেন।
বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ১৭ মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন ওই শিক্ষিকা। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদান ব্যাবহত হচ্ছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। কয়েকদিন আগে তদন্তও হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।