• আঞ্চলিক গ্রাম-গঞ্জ

    স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবারের মানবেতর জীবন যাপন

      প্রতিনিধি ১২ জুলাই ২০২৩ , ১১:১৯:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    সোবাহান সৈকত -বিশেষ প্রতিনিধি (ফরিদপুর)

    কেমন আছেন কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবার। স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের শহীদ পরিবারের খোঁজ খবর রাখেনি কেউ।

    বর্তমান অব্দি শহীদ পড়িবার গুলো পায়নি সরকারী স্বীকৃতি বা কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা। ঘুঁচেনি তাদের দুঃখ দুর্দশা। অবজ্ঞা, অবহেলা আর দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে চলছে যাদের জীবন সংগ্রাম। তাঁদের কারো পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের খবর রাখেনা কেউ। ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই সেই ভয়াল দিনের কথা,

    ১৯৭১ সালের ১৮ মে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমন চালিয়ে নিরীহ ৯ জন হিন্দু ব্যাক্তিকে গনহত্যা করে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন শহীদ ননী সাহা। ১৯৭১ সালের ১৮ মে পাক হানাদার বাহিনী কৃষ্ণপুরের সাহা পাড়ায় ননী সাহাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে।

    তখন ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর। শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহা কান্না জরিত কন্ঠে এই প্রতিবেদক কে জানান, বাবা কে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করার পর আমি ৭ বছর বয়সে কাজের সন্ধানে যশোর চলে যাই। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে অনেক পরিশ্রম করে আজো বেঁচে আছি। এখন আমার বয়স ৫৪ বছর। আমার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে জয়া সাহা কলেজে পড়ালেখা করে।

    আমি পরের দোকানে কামলা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। ২০২০ সালে কৃষ্ণপুরে গনহত্যায় নিহতদের জন্য বদ্ধভূমি স্থান নির্ধারিত করে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হলেও ভাগ্য ফেরেনি শহীদ পরিবারের। শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার স্ত্রী জানান আমার কন্যা জয়া সাহা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি। তারপরেও সে ভাল ছাত্রী হওয়ার সুবাদে বহু কষ্টে স্থানীয় বাচ্চাদের টিউশনি করিয়ে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়াশুনা করে।

    তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবার কে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি এবং শহীদ ননী সাহার নাতনি প্রতিবন্ধী জয়া সাহাকে একটি কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থ্যা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন। শহীদ ননী সাহার নাতনি জয়া সাহা বলেন আমার দাদুকে পাক হানাদ বাহিনী ১৯৭১ সালে নির্মম ভাবে হত্যা করে।

    কিন্তু মহান স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর অতিবাহিত হলে আজো সেই গণহত্যায় নিহত মুক্তিযোদ্ধা দের দেওয়া হয়নি সরকারি সিকৃতি। দেওয়া হয়নি কোন সরকারি অনুদান বা সাহায্য। আমার বাবা একজন দিন মজুর। সে বহু কষ্ট করে আমাদের বড় করেছে। আমি নিজে সারিরিক অক্ষমতার জন্য কিছু করতে পারিনা, তবে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি।

    করুনা করেও আমাকে যদি একটি চাকুরী দেওয়া হয় তবে, আমি বাবার অসচ্ছল সংসারকে কিছুটা সহযোগীতা করতে পারতাম। জয়া সাহা। বর্তমানে তিনি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স এর ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী। অনার্স পাস করার পর একটি চাকরির জন্য তিনি দেশের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ