বিজ্ঞানের মূল কাজ হলো হৃদয়ের অন্ধকার দূরীভূত করা: রাবি উপাচার্য | ক্যাম্পাস
- আপডেট সময় : ০১:০১:৩০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২২
- / ৯৬১৩ বার পড়া হয়েছে
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক,রাবি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, মানুষ পরাজিত হওয়ার জন্য জন্ম নেয়নি। প্রতিনিয়ত বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের ধর্ম।
বিজ্ঞানের মূল কাজ হলো হৃদয়ের অন্ধকার দূরীভূত করা। এখানে মুখ্য ভূমিকা হলো বিজ্ঞানীদের। বাংলাদেশের হেলথ সেক্টর নিয়ে অনেক কথা আছে। আমরা আমাদের নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করি না।
রোববার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত জনস্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে ‘ব্রিংগিং টেকনোলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ আনডার ওয়ান আমব্রেলা ইন বাংলাদেশ: ব্রেকিং ব্যারিয়ারস’ শীর্ষক এক সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য আরো বলেন, জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হলেও, আমরা সেটার যথাযথ ব্যবহার করতে পারি না। এটা আমাদের জাতীয় একটা সমস্যা বলা যায়। তবে আশার কথা হলো ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালে আমাদের আয়ুষ্কাল ছিল ৬৩ বছর, এখন সেটা ৭৩ বছর। ২০০৫ সালে শিশু মৃত্যু হার ছিল হাজারে ৫২ জন এখন সেটা ২৪ জন। ২০০৫ সালে মাতৃমৃত্যু হার ছিল প্রতি লাখে ৩৪৮ জন, এখন সেটা কমে প্রায় ১৪৮। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার কারণে এই অর্জন সম্ভবপর হয়েছে।
প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর তানজিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে জনস্বাস্থ্যের বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে, যার ফলাফল সুদূরপ্রসারী। এক সময় চিকিৎসার জন্য মানুষ ফকির কিংবা কবিরাজের কাছে যেত, ফলে অনেক সময় তারা মনগড়া ও অপচিকিৎসার কবলে পড়তো।
এসব চিকিৎসা প্রায়ই ছিলো স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক, এমনকি কখনো কখনো প্রাণহানির কারণ হতো। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে সেই অবস্থার বেশ পরিবর্তন হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি অনেক নিখুঁতভাবে রোগ সনাক্ত করছে এবং গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি ও ঔষধ আবিস্কার হচ্ছে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বাংলাদেশ শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. সেজুতি সাহা বলেন, যেখানে বেশি প্রযুক্তি আছে, সেখানে রোগী কম। আর যেখানে বেশি রোগী আছে, সেখানে প্রযুক্তি কম। বর্তমানে এই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
কিন্ত এই যে গ্যাপ, এই গ্যাপটা আমাদের দূর করতে হবে। এছাড়া, বাংলাদেশি শিশুদের চিকনগুনিয়া ও মেনিনজাইটিস রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা ও সম্ভাবনা এবং এক্ষেত্রে নিজের সাফল্য নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা বাংলাদেশের শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছি, টাইফয়েড, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ সনাক্তকরণ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকরী সমাধান দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতারও মুখোমুখি হতে হয়েছে।
বিশেষ করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ কম ও দাম বেশি, গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অপ্রতুলতা ইত্যাদি। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা দেশে তরুণদের প্রকৃত বিজ্ঞান চিন্তায় অনুপ্রেরণা দিতে দিতে চাই, যাতে একঝাঁক তরুণ বিজ্ঞানী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
অন্যান্য বক্তা ছিলেন ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক আরিফ মোহাম্মদ তন্ময় ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট নাজিফা তাবাসসুম।