ঢাকা ০১:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন,ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০৩:০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২
  • / ৯৬২৫ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মনির হোসেন মাহিন,রাবি প্রতিনিধি॥

অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামসুল ইসলামকে মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা ও তার দুই সহযোগী কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগ।

রোববার (২১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশের প্যারিস রোডে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশাসনের নিরব থাকার ফলেই ছাত্রলীগ প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদেরকে নির্যাতন করার সাহস পাচ্ছে জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজিব বলেন, আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি আমাদের নিরাপত্তার জন্য।

সামসুল ইসলাম মতিহার হলে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে তার পরিবার চালাতো। তাকে তিনঘণ্টা যাবত আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন এমন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক দ্বিতীয়বার এমন ঘৃণ্য কাজ কেউ করতে গেলে দৃষ্টান্তের কথা একবার হলেও চিন্তা করে। ওরা ওদের কাজ করবে আমরা আমাদের করি। আমরা চাই দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।

তদন্ত কমিটির মধ্যেই নির্যাতনের বিচার সীমাবদ্ধ জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসাইন বলেন, এমন নির্যাতনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে অন্তরালে কিভাবে বিচার করে আদৌও আমরা জানিনা।

আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকি এ ঘটনা আমাদের সাথেও ঘটতে পারে। পূর্বের যে নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটেছে তার বিচার হয়েছে কিনা আমরা কেউ জানিনা। যারা এমন এহেন নির্যাতনের কাজগুলো করে তারা কিন্তু ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে হাঁটাচলা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বিদায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে।

বাংলাদেশকে নষ্ট করার পিছনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকান্ড বাংলাদেশে দুর্ঘন্ধ ছড়াচ্ছে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকদিন থেকে এমন শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে এবং আমরা সচেতন ছাত্র-শিক্ষক সমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমার বিভাগের সামসুল ইসলাম নামের শিক্ষার্থীর উপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়ছে এবং টাকা ছিনতাই করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। স্বাধীন দেশে এমন কান্ড হওয়ার পরও সরকার কেন নিরব থাকছে?

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু করার ক্ষমতা নেই তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই যে সংগঠনটি আপনার বাবার হাতে গড়া। আজকে তারা যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে আপনি নিরব আছেন কেন?

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন ও অর্থনীতি বিভাগ মিলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাতে রাবির অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামসুল নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিনঘণ্টা আটকে রেখে মারধর এবং জোরপূর্বক ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ তুলে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত দেন।

এতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে ওইদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলের ২৩২ নম্বর রুমে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন।

http://এইচ/কে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন,ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

আপডেট সময় : ০৩:০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ অগাস্ট ২০২২

মনির হোসেন মাহিন,রাবি প্রতিনিধি॥

অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামসুল ইসলামকে মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা ও তার দুই সহযোগী কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অর্থনীতি বিভাগ।

রোববার (২১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশের প্যারিস রোডে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রশাসনের নিরব থাকার ফলেই ছাত্রলীগ প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদেরকে নির্যাতন করার সাহস পাচ্ছে জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রাজিব বলেন, আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি আমাদের নিরাপত্তার জন্য।

সামসুল ইসলাম মতিহার হলে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে তার পরিবার চালাতো। তাকে তিনঘণ্টা যাবত আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা চাই প্রশাসন এমন একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক দ্বিতীয়বার এমন ঘৃণ্য কাজ কেউ করতে গেলে দৃষ্টান্তের কথা একবার হলেও চিন্তা করে। ওরা ওদের কাজ করবে আমরা আমাদের করি। আমরা চাই দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।

তদন্ত কমিটির মধ্যেই নির্যাতনের বিচার সীমাবদ্ধ জানিয়ে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসাইন বলেন, এমন নির্যাতনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে অন্তরালে কিভাবে বিচার করে আদৌও আমরা জানিনা।

আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকি এ ঘটনা আমাদের সাথেও ঘটতে পারে। পূর্বের যে নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটেছে তার বিচার হয়েছে কিনা আমরা কেউ জানিনা। যারা এমন এহেন নির্যাতনের কাজগুলো করে তারা কিন্তু ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে হাঁটাচলা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বিদায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে।

বাংলাদেশকে নষ্ট করার পিছনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ছাত্রলীগের কর্মকান্ড বাংলাদেশে দুর্ঘন্ধ ছড়াচ্ছে।

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকদিন থেকে এমন শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে এবং আমরা সচেতন ছাত্র-শিক্ষক সমাজ এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। আমার বিভাগের সামসুল ইসলাম নামের শিক্ষার্থীর উপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়ছে এবং টাকা ছিনতাই করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। স্বাধীন দেশে এমন কান্ড হওয়ার পরও সরকার কেন নিরব থাকছে?

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু করার ক্ষমতা নেই তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলতে চাই যে সংগঠনটি আপনার বাবার হাতে গড়া। আজকে তারা যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে আপনি নিরব আছেন কেন?

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিবাদ সমাবেশে স্টুডেন্টস রাইটস অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন ও অর্থনীতি বিভাগ মিলে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাতে রাবির অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামসুল নামের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে তিনঘণ্টা আটকে রেখে মারধর এবং জোরপূর্বক ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ তুলে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত দেন।

এতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে ওইদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলের ২৩২ নম্বর রুমে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেন।

http://এইচ/কে