• সাহিত্য সংস্কৃতি

    আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

      প্রতিনিধি ৮ মার্চ ২০২৩ , ৬:৩০:১২ প্রিন্ট সংস্করণ

    ফারজানা রহমান সম্পা,কুবি প্রতিনিধি। 

    ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন…..এই প্রতিপাদ্য নিয়ে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশে ও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।আন্তর্জাতিক নারী দিবস,পূর্বনাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস।প্রতি বছর ৮ মার্চ তারিখে পালিত হয়।বিশ্বের এক এক প্রান্তে নারী দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য এক এক প্রকার হয়।নানা রকম আয়োজন,অনুষ্ঠান, শোভাযাত্রার মাধ্যমে এ দিনটি উদযাপন করা হয়।

    এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস।১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পূর্ব থেকেই এই দিবসটি পালিত হয়।১৯৭৫ সালের ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে সারা পৃথিবী জুড়েই পালিত হচ্ছে দিনটি নারীর সমঅধিকার আদায়ের প্রত্যয় নিয়ে।বিশ্বের অনেক দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি  ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

    বিশ্বের প্রতি প্রান্তে নারীদিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য নারীর প্রতি সাধারণ সম্মান, শ্রদ্ধা ও সংহতি জ্ঞাপন, নারীর আর্থিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবমাননা প্রতিহত করা এবং নারীর বিরুদ্ধে নানামুখী আক্রমণ, সন্ত্রাস ও নির্যাতনের অবসান ঘটিয়ে নারীর মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

    কথায় বলে-আমরা নারী, আমরাই পারি।তবে বর্তমান সমাজ এটা মানতে রাজি নয়।নারী মানে ঘরে থাকবে,রান্না করবে, বাচ্চা সামলাবে এটাই তাদের ধারনা।পুরুষের মতো বাহিরে গিয়ে কাজ করবে কেন।তবে এখন শুধু ঘর সামলানো নয়,নারীরা অবদান রাখছে সব ক্ষেত্রে।

    স্বকর্মসংস্থান থেকে শুরু করে পোশাক শিল্প,সেবা, সরকারি চাকরি, দেশ পরিচালনা, সবকিছুতে রয়েছে নারীদের বিচরণ।সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের ২০২০ সালের গবেষণায় বলা হয়, মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) নারীর অবদান প্রায় ২০ শতাংশ।

    ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মারিয়া বিনতে সেলিম বলেন – একজন তরুণী থেকে মা,কিংবা সাধারণ এক মহিলা থেকে পেশাগত জীবনে অসাধারণ হয়ে ওঠা প্রতিটি নারীর জীবনে কিছু না কিছু লড়াই থাকে আর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানায় নারী দিবস।
    ডিজিটাল বিশ্ব হোক সবার,কোনো জেন্ডার বৈষম্য থাকবে না এটাই প্রত্যাশা।

    ডিজিটাল প্রযুক্তির এ যুগে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের দক্ষতা বাড়ছে। শিক্ষা,প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা এখন সবকিছুতেই নারীর অবদান অনস্বীকার্য। যেটা অনেক আগে থেকেই হয়ে এসেছে। তাই কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন-বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।

    নারীশক্তির বাস্তবায়ন বা  নারীর ক্ষমতায়নের মানে হলো, সমাজের প্রতিটি স্তরে এমন একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা যেখানে নারী স্বাধীন ভাবে বিচরণ করবে এবং যোগ্য মর্যাদার অধিকারিনী হয়ে উঠবে,নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে বস্তুগত, মানবিক ও জ্ঞান সম্পদের উপর।সেদিনই নারীজাতি পাবে পূর্ণ মর্যাদা ।

    নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিন বলেন-নারী তার দক্ষতা ও কৃতিত্বের প্রমানে অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু তবুও বলতে হবে নারী নির্যাতন,ধর্ষন,পুরুতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি কারনে নারীর ক্ষমতায়ন পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না।

    পুরুষ শাসিত সমাজ বলে নারীরা অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার সুযোগ থেকে।তাই বেগম রোকেয়ার সেই উক্তি বলতেই হয়-শিক্ষা লাভ করা সব নর-নারীর অবশ্য কর্তব্য।’ কিন্তু আমাদের সমাজ সর্বদা তাহা অমান্য করেছে। অবমাননা ও অত্যাচারে অভ্যস্ত নারী প্রতিনিয়ত পুরুষের হাতে লাঞ্ছিত হলেও  এ কথা অনস্বীকার্য যে   নারী শক্তি ছাড়া  পৃথিবীতে কোনো কিছুই সম্ভব হয়ে ওঠেনি এবং ভবিষ্যতে ও  উঠবে না । যুগে যুগে ইতিহাস সমৃদ্ধির তালিকায় নারীরাই শীর্ষস্থান গ্রহণ করে এসেছে।নারীদের শক্তি বিহীন পৃথিবী সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না।

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ