কালীগঞ্জে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ০৯:১২:৪৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ নভেম্বর ২০২৩
- / ৯৬২৬ বার পড়া হয়েছে
মোঃ শাহনেওয়াজ, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ভোগদখলীয় সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে রাতের অন্ধকারে ভেকু দিয়ে পুকুর খননের অভিযোগে থানায় ডায়েরী করেছেন মো. আমির হোসেন, গাজীপুর আদালতে হাসমত উল্লাহ ও ইসমাইল মীরের দুই মামলা।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের ১৬১ ও ১৫৬ নং দাগে রেকর্ডীয় মালিক জামিলা খাতুন, মোহাম্মদ আলী ও জৈনদ্দিন গং। রেকর্ডীয় মালিক জামিলা খাতুনের ওয়ারিশ মুনসুর আলী মীর, আবুল হোসেন মীর, আমির হোসেন, দুলাল মীর, রহিমা খাতুন, মৃত মোহাম্মদ আলীর ওয়ারিশ হযরত আলী, আব্দুল আলী মীর, হানিফ মীর, মস্তফা মীর, রোস্তম আলী মীর ও জৈনদ্দিন এর ওয়ারিশ মোহাম্মদ আলী, আহাম্মদ আলী, জাহেদ আলী, শহর আলী, জংশর আলী, আঙ্কেল আলী।
এবং রেকর্ডীয় মালিক ছমির উদ্দিন মৃত্যুকালে এক স্ত্রী, একবোন ও তাহার মৃত চার ভাইয়ের ৭ ছেলে রেখে যান। তারা পৈত্রিক, মাত্রিক ও ক্রয়কৃত সম্পত্তি যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে আছেন। উক্ত সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে মৃত আব্দুল জব্বার মীরের ছেলে আহসান, হাসমত উল্লাহ, মো. নুরুল হক মীরের ছেলে মাহবুবুর রহমান, হাসান ও আহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল মালেক ও ইসমাইল গত ১৮ অক্টোবর জমির বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের জন্য পিলার তৈরীর কাজ শুরু করেন।
পরে গত ১৯ অক্টোবর আমির হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। থানার এস আই মো. রফিকুল ইসলাম লিটন অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে ২৫ অক্টোবর থানায় ৬০৮নং সাধারণ ডায়েরী করেন। বিবাদীগণ তাতে ক্ষীপ্ত হয়ে গত ৯ নভেম্বর রাতে পরিকল্পিত ভাবে ভেকু নিয়ে ৫০/৬০জন অজ্ঞাত লোক জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে বিভিন্ন প্রজাতির ৪/৫টি পাছ ভেঙ্গে মাটি কাটা শুরু করেন। তাদের ন্যায় সঙ্গত প্রতিবাদ করার পরও তারা সন্ত্রাসী কায়দায় রাতারাতি পুকুর খনন করে ফেলেন। মো. আমির হোসেন পরে থানায় যোগায়োগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের কাজ বন্ধ রাখতে মৌখিক ভাবে বলেন। কিন্তু তারা আইনকে অমান্য করে কাজ অব্যাহত রাখেন।
ভূক্তভোগী মো. আমির হোসেন বলেন, আমি উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামের মৃত মানিক মীর ও জামিলা খাতুনের ছেলে। আমার মা জামিলা খাতুন তালিয়া মৌজার এস এ ১৮ নং খতিয়ানে রেকর্ডীয় মালিক দেওয়ান আলীর ছেলে হাকিম উদ্দিন, হাবিজ উদ্দিন মেয়ে তমিজা খাতুন ও সাজেদা খাতুন এর নিকট থেকে বিগত ২ নভেম্বর ১৯৭৮ইং তারিখে সাফ কবলা ৬৬৬৫ নং দলিল মূলে ক্রয় সূত্রে ও আর এস ১১নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় ১২৩ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। মৃত জামিলা খাতুনের সম্পত্তিতে আমরা চার ভাই মুনসুর আলী মীর, আবুল হোসেন মীর, আমির হোসেন ও দুলাল মীর এবং একবোন রহিমা খাতুন ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হই।
আমরা আমাদের জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে ছিলাম। কিন্তু গত ১৮ অক্টোবর ও ৯ নভেম্বর আমাদের শরীক হাসমত উল্লাহ, ইসমাইল হোসেন ও মালেক অজ্ঞাত ৫০/৬০জন ভাড়াটিয়া লোক নিয়ে রাতের অন্ধকারে আমাদের জমিতে অনাধিকার প্রবেশ করে ভেকু চালিয়ে রাতারাতি পুকুর খনন করে ফেলেন। তাদের কাজে বাধা দিলে আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে।
জমির মালিক রুস্তম আলী মীর বলেন, আমি উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলী মীরের ছেলে। আমার পিতা তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের রেকর্ডীয়, পৈত্রিক ও ৬টি দলিল মূলে ৭৬.২৩ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। উক্ত সম্পত্তিতে আমরা ৫ ভাই ও ১ বোন ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে আছি। কিন্তু আমাদের শরীক হাসমত উল্লাহ, ইসমাইল হোসেন ও মালেক অজ্ঞাত ৫০/৬০ জন ভাড়াটিয়া নিয়ে রাতের অন্ধকারে ভেকু চালিয়ে মাটি কেটে পুকুর খনন করে ফেলেন। তাদের কাজে বাধা দিলে তারা আমাদের বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
খিলক্ষেত থানার তলনা এলাকার মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমি উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া মৌজার ১৮নং এস এ খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক দেওয়ান আলীর নাতি ও সাজেদা খাতুনের ছেলে। আমার মামা হাকিম উদ্দিন, হাবিজ উদ্দিন, খালা তমিজা খাতুন পৈত্রিক ও মাতা সাজেদা খাতুন রেকর্ডীয় ও পৈত্রিক সূত্রে মালিক হয়ে বিগত ২ নভেম্বর ১৯৭৮ইং তারিখে সাফ কবলা ৬৬৬৫ নং দলিল মূলে ১৮ শতাংশ সম্পত্তি স্থাণীয় জামিলা খাতুন এর নিকট বিক্রি করেন। বাকী সম্পত্তি তালিয়া গ্রামের হাসমত উল্লাহ, ইসমাইল হোসেন ও মালেক গং জোরপূর্বক দখল করে আছেন।
অভিযুক্ত হাসমত উল্লাহ মীর বলেন, আমি উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের তালিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে। মৃত আব্দুল জব্বার তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের ১৫৬নং দাগে রেকর্ডীয় ও ক্রয়সূত্রে ১২.১৫ শতাংশের মালিক হন। তার সম্পত্তিতে আমরা তিন ভাই ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে ১২ শতাংশ জমি ভোগ দখলে আছি।
গত ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকালে আমাদের জমিতে কাজ করার সময় কালীগঞ্জ থানার এস আই মো. রফিকুল ইসলাম লিটন আসেন। তিনি কোন অভিযোগ ছাড়াই আমাদের শ্রমিক নুরুন নবীকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। রাতে আমরা তাকে থানা থেকে নিয়ে আসি। পরে থানার ওসি সাহেব উভয় পক্ষ নিয়ে বসে সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু আমির হোসেন গং অনিচ্ছা প্রকাশ করায় তা সম্বব হয়নি। পরে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত-২, গাজীপুরে তাদের বিরুদ্ধে ৫৬৪/২৩ নং মোকদ্দমা দায়ের করি। তারা ভূয়া কাগজপত্র তৈরী করে তাদের প্রাপ্যতার চেয়ে বেশি জমি দখলে আছেন। তার পরও তারা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার সহ কাজে বাধা প্রদান করে আসছে।
অভিযুক্ত ইসমাইল হোসেন মীর বলেন, আমি তালিয়া মৌজার আর এস ১১নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক মৃত আহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি এই খতিয়ানের ১৬১ নং দাগে রেকর্ডীয় ও নুরুল হক মীরের ছেলেদের নিকট থেকে ক্রয়সূত্রে ৩০.৬৬ শতাংশ সম্পত্তির মালিক হন। উক্ত সম্পত্তি হতে আমি বর্তমানে ২৭ শতাংশ সম্পত্তি ভোগ দখলে আছি। গত ১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার আমাদের জমিতে কাজ করার সময় বিকালে কালীগঞ্জ থানার এস আই মো. রফিকুল ইসলাম লিটন আমাদের জমিতে যান। তিনি কোন অভিযোগ ছাড়াই আমাদের শ্রমিক নুরুন নবীকে আটক করে থানায় নিয়ে আ