• সাহিত্য সংস্কৃতি

    বাংলাদেশের বার্তার “সাহিত্য কন্ঠ”

      প্রতিনিধি ২৫ মার্চ ২০২৩ , ৪:৩২:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

    ……প্রিয় স্বাধীনতা…….
        শচীন্দ্র নাথ গাইন

    একাত্তরের পঁচিশেে মার্চ চালায় ওরা গুলি
    বুকের পাঁজর ঝাঁঝরা করে উড়ায় মাথার খুলি।
    রাতটা তখন অনেক গভীর সবাই ঘুমের ঘোরে
    আকাশ-বাতাস কাঁপন ধরায় শব্দ ছুটায় জোরে।
    মায়ের বুকে কান্না জমে বাবা পাথর শোকে
    বোবা বোনের মুখের ভাষা তাকায় নীরব চোখে।
    রক্ত গড়ায় স্রোতের ধারায় লালরঙা হয় নদী
    খুনি শাসক চালিয়ে হুকুম আঁকড়ে রাখে গদি।
    হঠাৎ ধকল সামলে নিতে একটু সময় লাগে
    ক্ষোভের আগুন দ্বিগুণ জ্বলে বীরজনতা জাগে।
    ভয়-ভীতিকে তুচ্ছ করে সামনে সবাই ছোটে
    আশার আলোর রেখা তখন ফুটতে থাকে ঠোঁটে।
    অটুট সাহস মনের মাঝে শক্ত করে গাঁথা
    যুদ্ধ শেষে মুক্ত হলো প্রিয় স্বদেশ মাতা।
    চললো লড়াই পাকির সাথে ন’মাস পুরো টানা
    সাগর সমান রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা আনা।

    …….স্বাধীনতা…….
    ফয়জুর রহমান

    খাঁচায় বন্ধি ছিলো ময়না পাখিটি
    কেহ বলে আল্লাহ কহো
    কেহ বলে কহো হরিবল ।
    সালাম আদাব শিখেছিলো সবই
    শিখেছিল বিদেশির ভাষা
    স্বাধীনতায় খাঁচার শিকল ।
    সেই কবে শিশুকাল অরণ্য জীবন
    ভাবনা মন্থর যেমন-তেমন
    গায়ে সহা ছিলো খাঁচাঘর।
    এই ভূমিতল উপরে মোড় আকাশ
    অধির বাতাস তুমুল ধ্বনিতে
    স্বাধীনতা দিলো আগুন খবর ।
    প্রাণ বিনীময় অগুন্তি তরু রসাতল
    কতশত তরু শিকড়ে উপুড়
    তবুও থামেনি পীড়ন প্রয়াণ ।
    একটি বজ্রকণ্ঠে জাগ্রত মুক্তির বাজ
    শুনাইলো গান শিকল ভাঙ্গার
    জাগলো সজোরে উত্তাল বন ।
    জাগ্রত বনানীতে সেইদিন ফিরে এসে
    স্বাধীনতা ষড়ঋতু দিলো নির্দেশ
    লাল সবুজের বিজয় উত্থানে।
    স্বাধীনতা সুখের দিন উড়ছে আকাশে
    বাজের ডানায় স্বজনের স্মৃতি
    বনানী ভাসছে চোখের প্লাবণে ।

     

    …….বিজয় ৭১……
    এম এইচ নাপু

    এ বিজয় নয় কবির কবিতা
    প্রেয়সীর বাঁকা হাসি
    বাসন্তী বসনায় দুরন্ত কিশোরী
    রাখালিয়া সুরের বাঁশি।
    এ বিজয় বড় কষ্টে পাওয়া
    বাঙালির ইতিহাস গাঁথা
    অগনিত বীরের রক্তে রঞ্জিত
    বাংলার এই মাটি কাদা।
    চাপাকান্না বুকে চেপে পিতার
    কেটেছে প্রহর নিশি,
    ষোলই ডিসেম্বর মিলেছে বিজয়
    ফিরে পেয়েছে শশী।
    কেটেছে প্রহর অভাগী মায়ের
    অবিরত পথ চেয়ে,
    বাড়ি ছাড়া আজ নাড়িছেঁড়া ধন
    কাটছে কি সময় খেয়ে?
    অনিদ্রা করেছে দুই চোখে ভর
    বিরহে ভুগেছে জায়া,
    কত নারী তার বিলিয়েছে সম্ভ্রম
    মিলেছে খেতাব বীরাঙ্গনা।
    বিজয়ের আড়ালে কত প্রাণ কাঁদে
    কত জল ঝরে চোখে
    কষ্টের জলছবি বয়ে বেড়ায় অবিরত
    তবুও হাসি ফুটে মুখে।

    …কি করে ভুলি তোমায়…
    জুলিয়াস খান

    তুমি দিয়েছো মোদের শয়নে ভূমি পৃথিবীব্যাপী
    তুমি দিয়েছো মোদের আকাশের ছাদ দিবারাত্রি
    তুমি দিয়েছো মোদের শীতল বাতাস জুড়াতে পরান
    তুমি দিয়েছো বিচরণে ভুমি ক্লান্তিতে সমীরণ
    তুমি দিয়েছো পাহাড় রাখিতে ভারসাম্য ধরার
    কি করে ভুলি তোমায় হে প্রিয় বলো।
    তুমি দিয়েছো নদী সাগর ভরা জল তৃষ্ণা মিটাতে
    তুমি দিয়েছো মাঠ ভরা শস্যকণা ক্ষুধা মিটাতে
    তুমি দিয়েছো বরিষণ ফল ফুল শস্য ফলাতে
    তুমি দিয়েছো সুধা গ্রীষ্ম বর্ষা হেমন্ত বসন্ত ঋতুতে
    তুমি দিয়েছো নিঃশ্বাস প্রশ্বাস জীবন বাঁচাতে
    কি করে ভুলি তোমায় হে প্রিয় বলো।
    তুমি দিয়েছো অসুখে ঔষুদ ক্লান্তিতে শান্তি
    তুমি দিয়েছো আঁধার আলো আবার ঘুমাতে রাত্রি
    তুমি দিয়েছো শক্তি চালাতে সমুদ্রে আকাশে যান
    তুমি দিয়েছো পরশের শান্তি হাতছানিতে পরান
    তুমি দিয়েছো মায়াভরা সংসার জীবন
    কি করে ভুলি তোমায় হে প্রিয় বলো।

    ……..অচিন পাখি……….
    মোহাম্মদ আজাদ আলী

    রক্তে মাংসে গড়া দেহ
    প্রভু রঙ্গ রসে ভরা,
    এক মুহুর্তে আসে তুফান
    পরক্ষনেই দাও ক্ষরা।
    সাড়ে তিনহাত মাটির ঘরে
    অচিন পাখির বাস,
    ধরা ছোঁয়া যায়না তারে
    থাকে চললে নিঃশ্বাস।
    ষড় রিপুর মন্ত্র দিয়ে
    সাজানো সেই ঘর,
    কেহ নয় আপন কারও
    সবাই সবার পর।
    তালা চাবি নাই ঘরের
    আল্লাহ তুমি মেহেরবান,
    বড় যতনে গড়ে প্রভু দিয়েছেন
    সৃষ্টির সেরা মান।
    মাটি দিয়ে তৈরি ঘরে
    আগুন পানির খেলা,
    নিজেরে চিনতে গেছি ভুলে
    যাচ্ছে কেটে বেলা।

     

    ……..জীবনের কথা………                                         আশীষ খীসা

    জীবনের কথা বলবো না আর আমি
    জীবন তো সব শেষ হয়ে গিয়েছে,
    বাকি জীবন যতটুকু আছে তাও
    আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে।
    বলবো না আমি কারোর কথা
    বলবো না আমি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কথা,
    আমি বলবো শুধু আমার কথা
    আমার গহীণে থাকা মনের ব্যাথা।
    মানুষের সাথে মানুষের মিলন
    প্রকৃতির সাথে মানুষের মিলন,
    কিন্তু প্রকৃতির সাথে হয়েছে আজি শত্রু
    তাই নেই আর আগের মত বন্ধন।
    কিন্তু সবার মনে রাখতে হবে
    প্রকৃতি আমাদের ক্ষতি করেনি,
    বরং আমরা প্রকৃতিকে ক্ষতি করছি
    সেটা কেন আমরা এতদিন বুঝেনি?

    মোহাম্মদ আফজাল হোসেন মাসুম
    …. সাহিত্য সম্পাদক…..
    .… বাংলাদেশের বার্তা……
    sampadok.afjal@gmail.com

    আরও খবর

                       

    জনপ্রিয় সংবাদ