অকথ্য ভাষায় গালাগালি সাংবাদিকদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেন চিকিৎসক

- আপডেট সময় : ০৩:১৩:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
- / ৯৯১৩ বার পড়া হয়েছে
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া এমন এক ভিডিও চিত্র ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে পাশাপাশি এই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরপরই শিশু হত্যার পর শিশুুর পরিবারকে ১লক্ষ টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার আরেকটি কলরেকর্ডও ফাঁস হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী‘র স্বজনের সাথে খারাপ আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে, রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছিড়ে ফেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে অশালীন আচরণ সহ অশ্লীল ভাষায় এসব কথা বলেন ডা. জয়ন্তী রানী ধর।
রোগীর স্বজন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় সাত মাসের অন্তসত্তা স্ত্রীকে নিয়ে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর এর কাছে যান দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাল তালুকদার। দূর থেকে রোগী না দেখে কাছ থেকে রোগীকে দেখার পরামর্শ দিতেই ক্ষিপ্ত হন ডাক্তার জয়ন্তী রানী। পরবর্তিতে চেম্বার থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হন রোগী ও স্বজনরা। তাৎক্ষণিক স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক এ বিষয়ে জানতে ক্লিনিকে গেলে ক্লিনিকের পরিচালক সঞ্জীব বিষয়টি সমাধানের জন্য সাংবাদিক দের সাথে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করতেই রীতিমতো চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন ডা.জয়ন্তী রাণী ধর। ‘‘আপনারা আমার বালও ছিড়তে পারবেন না’’ তার স্বামী মন্ত্রীর কাছের লোক বলেও সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে শুরু করেন। তার স্বামীর ছোট ভাই ডিআইজি, সাংবাদিকদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নেয়ারও হুমকি দেন তিনি।
ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর, এক সময় দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে থাকলেও বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন। প্রতি শুক্রবার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত অপারেশান করেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, ভালো কোন গাইনি চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্তঃসত্তা নারীরা তার কাছে আসেন। অভিযোগ রয়েছে নানা সময় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে আসছেন তিনি। সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে রোগী ও নবজাতক হত্যার অভিযোগও রয়েছে তার নামে। ২০২২ সালের ১২ আগষ্ট সিজারিয়ান অপারেশনের পরপরই এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ওই ডাক্তারের নামে। পরবর্তিতে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তা মিমাংশা করেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও ওই রকম অভিযোগ অহরহই উঠে আসলেও, তিনি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকার কারনে সাধারণ রোগী ও রোগীর স্বজনরা তাকে কিছু বলার সাহস পায়না।
সাংবাদিকদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করার বিষয়ে জানতে চাইলে, গালমন্দের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, অতিরিক্ত রোগীর চাপে উত্তেজিত হয়ে এরকম আচরণ করেছেন। এ জন্য তিনি দুঃখিত।