ঢাকা ০২:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থের অভাবে জীবন যুদ্ধে জয়ী সালমা খাতুন কি এবার পরাজয় বরণ করবে?

মুজাহিদ শেখ, শ্রীপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি৷
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৯৬০৯ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্তেও শক্ত মনোবলের সালমা খাতুনের মুখের মলিন হাঁসি দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি শারীরিক ভাবে খু্বই অসুস্থ্য।

স্থানীয় বাজারে মুদি দোকান দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীকতাকে জয়ী করে প্রায় ১৫ বছর ধরে বৃদ্ধ মা বাবাসহ তিন জনের সংসারের সাহায্য করেন সালমা।

সমাজসেবা অফিসের দেওয়া হুইল চেয়ারে করে সালমার মা তাকে বাজারে তার দোকানে দিয়ে আসলেও এখন তার অসুস্থতার কারণে সালমার বাবাই থাকে বাজারে দোকানে দিয়ে আসেন এবং রাতে নিয়ে আসেন।

নিজের চিকিৎসা ছাড়াও আছে অসুস্থ্য মায়ের চিকিৎসা খরচ, যা তার এই ছোট্ মুদি দোকানের স্বল্প আয় থেকে করা সম্ভব না।

সালমা খাতুন শ্রীপুর উপজেলার ২নং আমলসার ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন দরিদ্র কৃষক সোহবার হোসেন ও মনোয়ারা বেগমের মেয়ে।

নতুন করে প্রতিবন্ধী সালমা খাতুন প্রায় দেড় বছর ধরে কিডনিতে পাথর নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা ভুগছেন। ডাক্তার অপারেশনের কথা বললেও টাকার কারণে সেটাও করতে পারছেন না তিনি ও তার দরিদ্র রিবার। এজন্য কয়েকবার কিডনি রোগের সরকারি অনুদানের চেষ্টা করেও হয়েছেন ব্যর্থ।

দুই ভাই বোনের মধ্যে সালমা ছোট্। ছোট্ সালমার বয়স তখন মাত্র সাড়ে তিন বছর। আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগে হঠাৎ একদিন তার জীবনে নেমে আসে কালো মেঘের ছাঁয়া। সালমা আক্রান্ত হন জ্বরে। তার বাবা সোহরাব হোসেন তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দিলেও কয়েকদিন পরে সালমার বাবা মা দেখতে পান তাদের মেয়ের কোমড়ের নিচ থেকে দুই পা পর্যন্ত ও একটি হাত বাঁকা হয়ে গিয়েছে।
তারপর থেকে চিকিৎসাতেও ভালো হয়নি তাদের এক মাত্র আদরের মেয়ে। সেই থেকেই সালমার জীবন যুদ্ধ শুরু।

দরিদ্র কৃষক পিতার প্রতিবন্ধী মেয়ে সালমা ছোট থেকেই মানষিক ভাবে শক্ত মনোবলেন ছিলেন। সে শারীরিক প্রতিবন্ধীকতাকে জয় করতে ভর্তি হন স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে। প্রাইমারি শেষ করে মাধ্যমিকের দশম শ্রেণী পর্যন্ত আসার পরে অর্থিক সংকটের কারণে এসএসসি পরিক্ষা দেওয়া হয়নি তার।

সোহরাব হোসেন জানান, তার মেয়ে সালমা
নতুন করে কিডনিতে পাথর হবার পর থেকে প্রায়ই অসুস্থ্য থাকে।
যার কারণে ঠিকমত দোকানও খোলা সম্ভব হয়না তার। এতে করে সালমা ও তার মায়ের চিকিৎসারও সমস্যা হচ্ছে।

তাহলে কি অর্থের অভাবেই জীবন যুদ্ধে জয়ী সালমা খাতুন এবার পরাজয় বরণ করবে?

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

অর্থের অভাবে জীবন যুদ্ধে জয়ী সালমা খাতুন কি এবার পরাজয় বরণ করবে?

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্তেও শক্ত মনোবলের সালমা খাতুনের মুখের মলিন হাঁসি দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি শারীরিক ভাবে খু্বই অসুস্থ্য।

স্থানীয় বাজারে মুদি দোকান দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীকতাকে জয়ী করে প্রায় ১৫ বছর ধরে বৃদ্ধ মা বাবাসহ তিন জনের সংসারের সাহায্য করেন সালমা।

সমাজসেবা অফিসের দেওয়া হুইল চেয়ারে করে সালমার মা তাকে বাজারে তার দোকানে দিয়ে আসলেও এখন তার অসুস্থতার কারণে সালমার বাবাই থাকে বাজারে দোকানে দিয়ে আসেন এবং রাতে নিয়ে আসেন।

নিজের চিকিৎসা ছাড়াও আছে অসুস্থ্য মায়ের চিকিৎসা খরচ, যা তার এই ছোট্ মুদি দোকানের স্বল্প আয় থেকে করা সম্ভব না।

সালমা খাতুন শ্রীপুর উপজেলার ২নং আমলসার ইউনিয়নের বাজার সংলগ্ন দরিদ্র কৃষক সোহবার হোসেন ও মনোয়ারা বেগমের মেয়ে।

নতুন করে প্রতিবন্ধী সালমা খাতুন প্রায় দেড় বছর ধরে কিডনিতে পাথর নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণা ভুগছেন। ডাক্তার অপারেশনের কথা বললেও টাকার কারণে সেটাও করতে পারছেন না তিনি ও তার দরিদ্র রিবার। এজন্য কয়েকবার কিডনি রোগের সরকারি অনুদানের চেষ্টা করেও হয়েছেন ব্যর্থ।

দুই ভাই বোনের মধ্যে সালমা ছোট্। ছোট্ সালমার বয়স তখন মাত্র সাড়ে তিন বছর। আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগে হঠাৎ একদিন তার জীবনে নেমে আসে কালো মেঘের ছাঁয়া। সালমা আক্রান্ত হন জ্বরে। তার বাবা সোহরাব হোসেন তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দিলেও কয়েকদিন পরে সালমার বাবা মা দেখতে পান তাদের মেয়ের কোমড়ের নিচ থেকে দুই পা পর্যন্ত ও একটি হাত বাঁকা হয়ে গিয়েছে।
তারপর থেকে চিকিৎসাতেও ভালো হয়নি তাদের এক মাত্র আদরের মেয়ে। সেই থেকেই সালমার জীবন যুদ্ধ শুরু।

দরিদ্র কৃষক পিতার প্রতিবন্ধী মেয়ে সালমা ছোট থেকেই মানষিক ভাবে শক্ত মনোবলেন ছিলেন। সে শারীরিক প্রতিবন্ধীকতাকে জয় করতে ভর্তি হন স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে। প্রাইমারি শেষ করে মাধ্যমিকের দশম শ্রেণী পর্যন্ত আসার পরে অর্থিক সংকটের কারণে এসএসসি পরিক্ষা দেওয়া হয়নি তার।

সোহরাব হোসেন জানান, তার মেয়ে সালমা
নতুন করে কিডনিতে পাথর হবার পর থেকে প্রায়ই অসুস্থ্য থাকে।
যার কারণে ঠিকমত দোকানও খোলা সম্ভব হয়না তার। এতে করে সালমা ও তার মায়ের চিকিৎসারও সমস্যা হচ্ছে।

তাহলে কি অর্থের অভাবেই জীবন যুদ্ধে জয়ী সালমা খাতুন এবার পরাজয় বরণ করবে?