ঢাকা ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুর-২ থেকে পুনরায় ৪ সংসদীয় আসনে যুক্ত হওয়ার দাবী কৃষ্ণপুরবাসীর

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ১১:২১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
  • / ৯৬১১ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সোবাহান সৈকত, সদরপুর(ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুর-২ নগরকান্দা-সালথা আসন থেকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে সংসদীয় আসন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) এর সাথে পুনরায় সংযুক্ত করার জোর দাবী কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের।

সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাসসহ ১৩ জন সদস্য জানান, কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনে থাকার কারণে ইউনিয়নটি ভৌগোলিক ভাবে অসমান্তরাল। এছাড়া যোগাযোগ, উন্নয়ন ও শাসন সংক্রান্ত নানা জটিলতা বিদ্যমান।

এর প্রেক্ষিতে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসনের সথে যুক্ত করার লক্ষ্যে গত ১৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে জনগণের পক্ষে চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্র নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবর প্রেরণ করা হয়। পরে যুগ্ম সচিব মোঃ আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ শুনানীর দিন ১১ মে ২০২৩ ধার্য্য করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে বিগত ২০০৮ সালে সদরপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র ৬ নং কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথার) সংসদীয় আসনের সাথে সংযুক্ত করে। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নটি বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যহত হওয়া সহ নানাবিধ জটিলতার মধ্যে আছে। সেজন্য কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ ফরিদপুর-৪ আসনের সাথে যুক্ত হওয়ার জোর দাবী জানিয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস জানান, আবহমানকাল ধরে প্রশাসনিক ও ভৌগলিকভাবে সদরপুর উপজেলার অন্য ৮ টি ইউনিয়নের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষার প্রসার ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি ও ফরিদপুর-৪ এর অধীনে ভোট দিয়েছি। ২০০৮ সালে এই ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ এর সাথে যুক্ত হওয়ার পর আমরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। ফরিদপুর-৪ আসন সাবেক সীমানায় ফিরে গেলে (২০০৮ সালের আগের সীমানা) আমরা অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাব।

কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী আবুল কাইয়ুম হিরু বলেন, পূর্বের ফরিদপুর-৪ আসনের পূনঃবিন্যাস করে ফরিদপুর-৪ আসনকে বিলীন করা হয়েছে। পূর্বে যারা এখান থেকে এমপি, মন্ত্রী হয়েছেন তাদের পরিচিতি বিলীন হয়েছে। এছাড়া পূর্বের ফরিদপুর-৪ আসনটির ৯টি ইউনিয়ন পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর চরাঞ্চল, দূর্যোগপূর্ণ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনুন্নত এবং ভোটার সংখ্যা কম দেখিয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা ঠিক হয়নি।

সম্প্রতি দূর্বৃত্তদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া জেলা পরিষদ সদস্য এখলাছ আলী ফকির জানান, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে সাবেক সীমানায় ফিরিয়ে এনে ফরিদপুর-৪ আসনের সঙ্গে যুক্তকরা এখন সময়ের দাবী। বর্তমানে ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ থাকার পরেও শুধুমাত্র সংসদীয় আসন ভিন্ন হওয়ার কারনে অনেক জরুরী বিষয় গুলো সহজে সমাধান করা যাচ্ছেনা।

উল্লেখ্য সদরপুর উপজেলার রাজস্ব আয়ের সিংহভাগই আসে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন থেকে। কৃষ্ণপুর গরুর হাটের ও শাক-সবজি উৎপাদনে সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। ইউনিয়নটি নগরকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রায়ই আধিপত্য বিস্তারের মহড়া চলে। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একদলের উপর আছড়ে পড়ে আরেকদল। খুন-খারাবি, সংঘর্ষ এখানকার নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নবাসী মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন, শিক্ষা-দীক্ষা, কৃষিপণ্য উৎপাদনসহ অনেক কিছুতে আমরা উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছি।

কিন্তু উন্নয়নের দিক থেকে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোর থেকে আমাদের ইউনিয়ন অনেক পিছিয়ে আছে। ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কৃষ্ণপুরকে আলাদা করে ফেলার পর এখানকার সকল উন্নয়ন যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে এখন আর আমাদের ভালো চোখে দেখছেনা । তাই কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন সাবেক সংসদীয় আসন ফরিদপুর-৪ এ ফিরে এলে আমরা এ থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

ফরিদপুর-২ থেকে পুনরায় ৪ সংসদীয় আসনে যুক্ত হওয়ার দাবী কৃষ্ণপুরবাসীর

আপডেট সময় : ১১:২১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

সোবাহান সৈকত, সদরপুর(ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ

ফরিদপুর-২ নগরকান্দা-সালথা আসন থেকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে বাদ দিয়ে সংসদীয় আসন ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) এর সাথে পুনরায় সংযুক্ত করার জোর দাবী কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের।

সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাসসহ ১৩ জন সদস্য জানান, কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনে থাকার কারণে ইউনিয়নটি ভৌগোলিক ভাবে অসমান্তরাল। এছাড়া যোগাযোগ, উন্নয়ন ও শাসন সংক্রান্ত নানা জটিলতা বিদ্যমান।

এর প্রেক্ষিতে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসনের সথে যুক্ত করার লক্ষ্যে গত ১৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে জনগণের পক্ষে চেয়ারম্যানসহ ১৩ ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্র নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবর প্রেরণ করা হয়। পরে যুগ্ম সচিব মোঃ আব্দুল বাতেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ শুনানীর দিন ১১ মে ২০২৩ ধার্য্য করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে বিগত ২০০৮ সালে সদরপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র ৬ নং কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথার) সংসদীয় আসনের সাথে সংযুক্ত করে। কৃষ্ণপুর ইউনিয়নটি বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যহত হওয়া সহ নানাবিধ জটিলতার মধ্যে আছে। সেজন্য কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ ফরিদপুর-৪ আসনের সাথে যুক্ত হওয়ার জোর দাবী জানিয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান তিতাস জানান, আবহমানকাল ধরে প্রশাসনিক ও ভৌগলিকভাবে সদরপুর উপজেলার অন্য ৮ টি ইউনিয়নের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষার প্রসার ও শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি ও ফরিদপুর-৪ এর অধীনে ভোট দিয়েছি। ২০০৮ সালে এই ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ এর সাথে যুক্ত হওয়ার পর আমরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। ফরিদপুর-৪ আসন সাবেক সীমানায় ফিরে গেলে (২০০৮ সালের আগের সীমানা) আমরা অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাব।

কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী আবুল কাইয়ুম হিরু বলেন, পূর্বের ফরিদপুর-৪ আসনের পূনঃবিন্যাস করে ফরিদপুর-৪ আসনকে বিলীন করা হয়েছে। পূর্বে যারা এখান থেকে এমপি, মন্ত্রী হয়েছেন তাদের পরিচিতি বিলীন হয়েছে। এছাড়া পূর্বের ফরিদপুর-৪ আসনটির ৯টি ইউনিয়ন পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর চরাঞ্চল, দূর্যোগপূর্ণ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনুন্নত এবং ভোটার সংখ্যা কম দেখিয়ে কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা ঠিক হয়নি।

সম্প্রতি দূর্বৃত্তদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া জেলা পরিষদ সদস্য এখলাছ আলী ফকির জানান, কৃষ্ণপুর ইউনিয়নকে সাবেক সীমানায় ফিরিয়ে এনে ফরিদপুর-৪ আসনের সঙ্গে যুক্তকরা এখন সময়ের দাবী। বর্তমানে ইউনিয়নের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ থাকার পরেও শুধুমাত্র সংসদীয় আসন ভিন্ন হওয়ার কারনে অনেক জরুরী বিষয় গুলো সহজে সমাধান করা যাচ্ছেনা।

উল্লেখ্য সদরপুর উপজেলার রাজস্ব আয়ের সিংহভাগই আসে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন থেকে। কৃষ্ণপুর গরুর হাটের ও শাক-সবজি উৎপাদনে সুখ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। ইউনিয়নটি নগরকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় প্রায়ই আধিপত্য বিস্তারের মহড়া চলে। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে একদলের উপর আছড়ে পড়ে আরেকদল। খুন-খারাবি, সংঘর্ষ এখানকার নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নবাসী মতামত জানতে চাইলে তারা বলেন, শিক্ষা-দীক্ষা, কৃষিপণ্য উৎপাদনসহ অনেক কিছুতে আমরা উপজেলার মধ্যে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছি।

কিন্তু উন্নয়নের দিক থেকে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোর থেকে আমাদের ইউনিয়ন অনেক পিছিয়ে আছে। ফরিদপুর-৪ আসন থেকে কৃষ্ণপুরকে আলাদা করে ফেলার পর এখানকার সকল উন্নয়ন যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি আইন শৃঙ্খলার অবনতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে এখন আর আমাদের ভালো চোখে দেখছেনা । তাই কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন সাবেক সংসদীয় আসন ফরিদপুর-৪ এ ফিরে এলে আমরা এ থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারি।