ঢাকা ১১:০২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ ::
আকাশ ও স্থল পথে ভারতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশির মৃত্যু সারাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সুখবর কুমিল্লা জেলা রোভারের কোর্স ফর রোভার মেট কোর্সের সনদ প্রদান বাংলাদেশে ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো আবহাওয়া অফিস কুমিল্লা জেলা রোভারের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন প্রথম আলো কুমিল্লা বন্ধুসভার ব্যবস্থাপনায় এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগার উদ্বোধন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা জেলার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপ কমডেকায় অংশগ্রহনকারীদের সনদ প্রদান

সাতক্ষীরায় পাকা আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমন: দিশেহারা কৃষক

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০৯:২৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৯৬৭৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোঃ আহাদুল্লাহ সানা,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি। 

কর্তনের সময় পাকা আমন ধানে ব্যাপকভাবে কারেন্ট পোকা দেখা দিয়েছে সাতক্ষীরায়। জেলার বিভিন্ন এলাকাতে কারেন্ট পোকা আক্রমনে রোপা আমন চাষী দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানায়, বিভিন্ন কিটনাশক ব্যবহার করেও তেমন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া পাকা ধানে এমন কারেন্ট পোকা আগে কখনো দেখেনি তারা। এদিকে কারেন্ট পোকা দমনের জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমন চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামের আমন চাষি আজহারুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘা পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন।

ধানের ফলন ও খুবই ভালো। কিন্তু ক্ষেতে ধান পাকা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কারেন্ট পোকার আক্রমনে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত দুই দিনে প্রায় ২০ শতাংশ জমির ধান কর্তন করেছেন। কিন্তু কারেন্ট পোকা লেগে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে।

কৃষক আজহারুল ইসলাম আরো জানান, গত মৌসুমে একই পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করে ২০০ মণের উপরে ধান উৎপাদন করেছিলেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে ১০০ মন ধান পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, জমি চাষ, বীজতলা, চারা রোপন, সার, কিটণাশক ও শ্রমিকের মজুরী দিয়ে প্রতি বিঘাতে ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ধানের যে অবস্থা তাতে উৎপাদন খরচটা হয়তো কোনো মতে উঠে আসবে।

একই অবস্থা আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের প্রন্তিক কৃষক আব্দুল হাকিম, আব্দুল মান্নান ঢালী, রফিকুল বিশ্বাস, প নন রায় ও উত্তম কুমারের। তারা সকলেই কম বেশি পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন বলে জানান। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের ক্ষেতের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পাকা ধান। এ কৃষক জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী প্লেনাম, তড়িত ও মিমসিন সহ বিভিন্ন প্রকার কিটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

শুধু সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামই নয় জেলার সকল উপজেলাতেই চলতি রোপা আমনে দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে কারেন্ট পোকা। এতে করে মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন আমন চাষিরা।

এদিকে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলাতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ৮৮ হাজার ৭৬৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ২৪৩ হেক্টর পরিমান বেশি। গত মৌসুমে জেলায় রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল ৮৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৭ টন আমন উৎপাদন হয়।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, জেলার বেশ কিছু এলাকাতে বিচ্ছিন্নভাবে কারেন্ট পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। তবে সকল উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে যেয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য। কৃষকরা যাতে কারেন্ট পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পায় সে জন্য বিভিন্ন কিটনাশক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেয়া।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সাতক্ষীরায় পাকা আমন ক্ষেতে কারেন্ট পোকার আক্রমন: দিশেহারা কৃষক

আপডেট সময় : ০৯:২৯:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

মোঃ আহাদুল্লাহ সানা,সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি। 

কর্তনের সময় পাকা আমন ধানে ব্যাপকভাবে কারেন্ট পোকা দেখা দিয়েছে সাতক্ষীরায়। জেলার বিভিন্ন এলাকাতে কারেন্ট পোকা আক্রমনে রোপা আমন চাষী দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানায়, বিভিন্ন কিটনাশক ব্যবহার করেও তেমন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া পাকা ধানে এমন কারেন্ট পোকা আগে কখনো দেখেনি তারা। এদিকে কারেন্ট পোকা দমনের জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমন চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামের আমন চাষি আজহারুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘা পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন।

ধানের ফলন ও খুবই ভালো। কিন্তু ক্ষেতে ধান পাকা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কারেন্ট পোকার আক্রমনে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত দুই দিনে প্রায় ২০ শতাংশ জমির ধান কর্তন করেছেন। কিন্তু কারেন্ট পোকা লেগে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে।

কৃষক আজহারুল ইসলাম আরো জানান, গত মৌসুমে একই পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করে ২০০ মণের উপরে ধান উৎপাদন করেছিলেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে ১০০ মন ধান পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, জমি চাষ, বীজতলা, চারা রোপন, সার, কিটণাশক ও শ্রমিকের মজুরী দিয়ে প্রতি বিঘাতে ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ধানের যে অবস্থা তাতে উৎপাদন খরচটা হয়তো কোনো মতে উঠে আসবে।

একই অবস্থা আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের প্রন্তিক কৃষক আব্দুল হাকিম, আব্দুল মান্নান ঢালী, রফিকুল বিশ্বাস, প নন রায় ও উত্তম কুমারের। তারা সকলেই কম বেশি পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন বলে জানান। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার আক্রমনে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের ক্ষেতের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ পাকা ধান। এ কৃষক জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী প্লেনাম, তড়িত ও মিমসিন সহ বিভিন্ন প্রকার কিটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

শুধু সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামই নয় জেলার সকল উপজেলাতেই চলতি রোপা আমনে দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে কারেন্ট পোকা। এতে করে মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন আমন চাষিরা।

এদিকে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলাতে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ৮৮ হাজার ৭৬৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ২৪৩ হেক্টর পরিমান বেশি। গত মৌসুমে জেলায় রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল ৮৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৭ টন আমন উৎপাদন হয়।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, জেলার বেশ কিছু এলাকাতে বিচ্ছিন্নভাবে কারেন্ট পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। তবে সকল উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে যেয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য। কৃষকরা যাতে কারেন্ট পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা পায় সে জন্য বিভিন্ন কিটনাশক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেয়া।