ঢাকা ০৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ ::
আকাশ ও স্থল পথে ভারতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলি, বাংলাদেশির মৃত্যু সারাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সুখবর কুমিল্লা জেলা রোভারের কোর্স ফর রোভার মেট কোর্সের সনদ প্রদান বাংলাদেশে ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানালো আবহাওয়া অফিস কুমিল্লা জেলা রোভারের মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন প্রথম আলো কুমিল্লা বন্ধুসভার ব্যবস্থাপনায় এম সাদেক স্মৃতি পাঠাগার উদ্বোধন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা জেলার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপ কমডেকায় অংশগ্রহনকারীদের সনদ প্রদান

রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে অপরাধিদের প্রধান টার্গেট/ মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবক

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ১১:৩২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৯৬৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আজিজ উদ্দিন।।

৪ মাসে ১৫ নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক নিহত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠির প্রধান টার্গেট এখন ক্যাম্পের নেতা ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

ফলে গত ৪ মাসে ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং এ শিকার হয়েছে ১৫ জন নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক। সচেতন মহল ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে নেতৃত্ব না মানার প্রবণতা; অপরাধের প্রতিবন্ধকতা আধিপত্য বিস্তারের কারণে এসব খুন সংগঠিত হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা যাতে সংঘবদ্ধ হয়ে নিজের অধিকারের কথা বলতে না পারেন তার জন্য এসব টার্গেট খুন বলে মত রোহিঙ্গা বিশেষজ্ঞদের।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১৫ টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৪ মাসে ১৫ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

আর এসব খুনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) ও স্বেচ্ছায় পাহারারত স্বেচ্ছাসেবক।

উখিয়া-টেকনাফের ৩২ টি ক্যাম্পে আমর্ড পুলিশ ৩ টি ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। এসব এপিবিএন এর তথ্য মতে, ২২ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ এরশাদ (২২) নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক খুন হন। ২১ সেপ্টেম্বর খুন হন মোহাম্মদ জাফর (৩৫) নামের এক নেতা (মাঝি)। ১৮ সেপ্টেম্বর খুন হন আরেক স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ ইলিয়াস (৩৫)। ৯ আগস্ট দুই রোহিঙ্গা নেতা, ৮ আগস্ট টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক স্বেচ্ছাসেবক খুন হন। ১ আগস্ট একই ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নেতা মারা যান।

১ আগস্ট উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক, গত ২২ জুন কথিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতা মোহাম্মদ শাহ এবং ১৫ জুন একই গ্রুপের সদস্য মো. সেলিম (৩০) সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। ১৬ জুন রাতে উখিয়া ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক, ১০ জুন কুতুপালংয়ের চার নম্বর ক্যাম্পের আরেক স্বেচ্ছাসেবক, ৯ জুন এক রোহিঙ্গা নেতা, জুনের শুরুতে মে মাসে খুন হন রোহিঙ্গা নেতা সানা উল্লাহ (৪০) ও সোনা আলী (৪৬)।

৮ এপিবিএন এর উপ-অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর ক্যাম্প-১৮ এর একটি মাদ্রাসায় ৬ জনকে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে।

এসব হত্যাকান্ডের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে সকলেই যখন উদ্বিগ্ন, তখন বিকল্প হিসেবে চালু হয় স্বেচ্ছায় পাহারার। ক্যাম্পটির প্রতিটি ব্লকে পাঁচজন করে রাতে স্বেচ্ছায় পাহারা দেওয়া শুরু করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৮ এপিবিএন এর আওতাধীন ১১ টি ক্যাম্পের ৬৪ টি ব্লকের ৭৭৩ টি সাব-ব্লকে চালু হয় এ স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থা।

প্রতি রাতে ৩ হাজার ৮৬৫ জন রোহিঙ্গা পাহারা দিচ্ছে এ ১১ টি ক্যাম্পে। তারা কোন সন্দেহজনক লোকের আনাগোনা, চিহ্নিত অপরাধী, মাদক বেচাকেনা সহ নানা অপরাধের তথ্য দিচ্ছে এপিবিএন’কে। তিনি জানান।

গত ২৩ অক্টোবর থেকে চালু হওয়া স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থার কারণে ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মত অপরাধ কমেছে কয়েকগুণ। অপরদিকে মাদক উদ্ধার বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৬ গুণ, অস্ত্র উদ্ধার বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ গুন আর গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৩ গুণ।

৮ এপিবিএন এর সহকারি পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, জামতলী ক্যাম্প থেকে চালু হওয়া স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থা এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলছে। তিনি জানান, স্বেচ্ছায় পাহারা দেয়ার এই পদ্ধতির কারণে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রতিবন্ধকতায় পড়েছে। যার জের ধরে এসব অপরাধিরা এখন স্বেচ্ছাসেবক এবং মাঝিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে টার্গেট করছে। এতে স্বেচ্ছাসেবক ও মাঝিরা হত্যার শিকার হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অভিবাসন ও রোহিঙ্গা বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর জানান. রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ যিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নিতে কাজ শুরু করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক মহলে হয়ে উঠেছিলেন রোহিঙ্গাদের মুখপাত্র হিসেবে। কিন্তু ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বন্দুকধারীদের হাতে নিহত হন তিনি। মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠা মেনে নিতে না পেরে রোহিঙ্গাদেরই একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে মামলার তদন্তে উঠে এসেছে।

তিনি জানান, মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডটি সুনিদিষ্ট টাগের্ট কিলিং হিসেবে ধরা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মুখপাত্র হয়ে উঠা, হওয়ার চেষ্টা এমন মানুষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় খুন করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলো নিজেদের উদ্যোগে বা আধিপত্য বিস্তারের জন্য খুন করছেন এমনটা মনে হচ্ছে না। এখানে ভিন্ন কোন মহলের ইন্ধন থাকতে পারে।

উখিয়া কুতুপালং এলাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, সম্প্রতি ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় জনগন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ক্যাম্প ভিত্তিক মাঝি (নেতা), সাব- মাঝি, স্বেচ্ছাসেবকদের খুন করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের অবস্থান ঘোষণা করে যাচ্ছে।

কক্সবাজার পিপলস্ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, রোহিঙ্গারা স্বাভাবিকভাবে নেতা মানতে চান না। কেউ নেতা হয়ে উঠবে বা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে তা না মানার প্রবণতা তাদের রয়েছে। এ সুযোগকে কাজ লাগিয়ে নেতৃত্বশূণ্য করার কোন মিশন সশস্ত্র গোষ্ঠি বা ভিন্ন কোন মহল করছে কি না তা দেখা জরুরী।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অপরাধে ক্যাম্পের ঘটনায় যে সব মামলা হয় তা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ক্যাম্পের বাইরে পুলিশ সর্বোচ্চ সর্তক রয়েছে। প্রয়োজনে ক্যাম্পের ভেতরে এপিবিএনকেও সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

এইচ/কে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে অপরাধিদের প্রধান টার্গেট/ মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবক

আপডেট সময় : ১১:৩২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

আজিজ উদ্দিন।।

৪ মাসে ১৫ নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক নিহত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠির প্রধান টার্গেট এখন ক্যাম্পের নেতা ও স্বেচ্ছাসেবকরা।

ফলে গত ৪ মাসে ক্যাম্পে টার্গেট কিলিং এ শিকার হয়েছে ১৫ জন নেতা ও স্বেচ্ছাসেবক। সচেতন মহল ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের মধ্যে নেতৃত্ব না মানার প্রবণতা; অপরাধের প্রতিবন্ধকতা আধিপত্য বিস্তারের কারণে এসব খুন সংগঠিত হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা যাতে সংঘবদ্ধ হয়ে নিজের অধিকারের কথা বলতে না পারেন তার জন্য এসব টার্গেট খুন বলে মত রোহিঙ্গা বিশেষজ্ঞদের।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১৫ টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে গত ৪ মাসে ১৫ টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।

আর এসব খুনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গারা ক্যাম্প ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) ও স্বেচ্ছায় পাহারারত স্বেচ্ছাসেবক।

উখিয়া-টেকনাফের ৩২ টি ক্যাম্পে আমর্ড পুলিশ ৩ টি ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। এসব এপিবিএন এর তথ্য মতে, ২২ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ এরশাদ (২২) নামের একজন স্বেচ্ছাসেবক খুন হন। ২১ সেপ্টেম্বর খুন হন মোহাম্মদ জাফর (৩৫) নামের এক নেতা (মাঝি)। ১৮ সেপ্টেম্বর খুন হন আরেক স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ ইলিয়াস (৩৫)। ৯ আগস্ট দুই রোহিঙ্গা নেতা, ৮ আগস্ট টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক স্বেচ্ছাসেবক খুন হন। ১ আগস্ট একই ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নেতা মারা যান।

১ আগস্ট উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক, গত ২২ জুন কথিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপের নেতা মোহাম্মদ শাহ এবং ১৫ জুন একই গ্রুপের সদস্য মো. সেলিম (৩০) সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। ১৬ জুন রাতে উখিয়া ক্যাম্পে স্বেচ্ছাসেবক, ১০ জুন কুতুপালংয়ের চার নম্বর ক্যাম্পের আরেক স্বেচ্ছাসেবক, ৯ জুন এক রোহিঙ্গা নেতা, জুনের শুরুতে মে মাসে খুন হন রোহিঙ্গা নেতা সানা উল্লাহ (৪০) ও সোনা আলী (৪৬)।

৮ এপিবিএন এর উপ-অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর ক্যাম্প-১৮ এর একটি মাদ্রাসায় ৬ জনকে হত্যা করা হয়। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর হত্যা করা হয় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে।

এসব হত্যাকান্ডের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে সকলেই যখন উদ্বিগ্ন, তখন বিকল্প হিসেবে চালু হয় স্বেচ্ছায় পাহারার। ক্যাম্পটির প্রতিটি ব্লকে পাঁচজন করে রাতে স্বেচ্ছায় পাহারা দেওয়া শুরু করে। এরপর পর্যায়ক্রমে ৮ এপিবিএন এর আওতাধীন ১১ টি ক্যাম্পের ৬৪ টি ব্লকের ৭৭৩ টি সাব-ব্লকে চালু হয় এ স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থা।

প্রতি রাতে ৩ হাজার ৮৬৫ জন রোহিঙ্গা পাহারা দিচ্ছে এ ১১ টি ক্যাম্পে। তারা কোন সন্দেহজনক লোকের আনাগোনা, চিহ্নিত অপরাধী, মাদক বেচাকেনা সহ নানা অপরাধের তথ্য দিচ্ছে এপিবিএন’কে। তিনি জানান।

গত ২৩ অক্টোবর থেকে চালু হওয়া স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থার কারণে ক্যাম্পে অগ্নিসংযোগ, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মত অপরাধ কমেছে কয়েকগুণ। অপরদিকে মাদক উদ্ধার বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৬ গুণ, অস্ত্র উদ্ধার বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ গুন আর গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৩ গুণ।

৮ এপিবিএন এর সহকারি পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, জামতলী ক্যাম্প থেকে চালু হওয়া স্বেচ্ছায় পাহারা ব্যবস্থা এখন উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলছে। তিনি জানান, স্বেচ্ছায় পাহারা দেয়ার এই পদ্ধতির কারণে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা প্রতিবন্ধকতায় পড়েছে। যার জের ধরে এসব অপরাধিরা এখন স্বেচ্ছাসেবক এবং মাঝিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে টার্গেট করছে। এতে স্বেচ্ছাসেবক ও মাঝিরা হত্যার শিকার হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে ক্যাম্পের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অভিবাসন ও রোহিঙ্গা বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনীর জানান. রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ যিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত নিতে কাজ শুরু করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক মহলে হয়ে উঠেছিলেন রোহিঙ্গাদের মুখপাত্র হিসেবে। কিন্তু ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বন্দুকধারীদের হাতে নিহত হন তিনি। মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠা মেনে নিতে না পেরে রোহিঙ্গাদেরই একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে মামলার তদন্তে উঠে এসেছে।

তিনি জানান, মুহিবুল্লাহ হত্যাকান্ডটি সুনিদিষ্ট টাগের্ট কিলিং হিসেবে ধরা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মুখপাত্র হয়ে উঠা, হওয়ার চেষ্টা এমন মানুষকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় খুন করা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সশস্ত্র গোষ্ঠিগুলো নিজেদের উদ্যোগে বা আধিপত্য বিস্তারের জন্য খুন করছেন এমনটা মনে হচ্ছে না। এখানে ভিন্ন কোন মহলের ইন্ধন থাকতে পারে।

উখিয়া কুতুপালং এলাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, সম্প্রতি ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় জনগন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। ক্যাম্প ভিত্তিক মাঝি (নেতা), সাব- মাঝি, স্বেচ্ছাসেবকদের খুন করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তাদের অবস্থান ঘোষণা করে যাচ্ছে।

কক্সবাজার পিপলস্ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানান, রোহিঙ্গারা স্বাভাবিকভাবে নেতা মানতে চান না। কেউ নেতা হয়ে উঠবে বা তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে তা না মানার প্রবণতা তাদের রয়েছে। এ সুযোগকে কাজ লাগিয়ে নেতৃত্বশূণ্য করার কোন মিশন সশস্ত্র গোষ্ঠি বা ভিন্ন কোন মহল করছে কি না তা দেখা জরুরী।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন অপরাধে ক্যাম্পের ঘটনায় যে সব মামলা হয় তা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ক্যাম্পের বাইরে পুলিশ সর্বোচ্চ সর্তক রয়েছে। প্রয়োজনে ক্যাম্পের ভেতরে এপিবিএনকেও সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

এইচ/কে