ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের বার্তার “সাহিত্য কন্ঠ”

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
  • / ৯৭৩৪ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি
  • বাসনা
    ফরিদা আক্তার
  • কেন এত বাঁচার ইচ্ছা জাগে মনে
    ছুটে যেতে চাই মন মায়ার টানে
    স্নেহ ভালবাসায় ঘেরা চারপাশ
    মনে যতই থাকুক হাঁ হতাশ।
    অভিমান একটু একটু করে দূরে সরে যায়
    আতপচ্ছায়ায় পায়ে পড়ে মায়াবেড়ী
    হাসি ফুটে মুখে বাঁচার আশায়।
    আধফোটা ফুল বিলায় আতরগন্ধ
    অশরীরে কিছু হাটে সন্তর্পনে
    পুরো অবয়বে।
    খুব গভীরতায় বলে কানে কানে দিয়ে আড়হাসি
    জীবন সুন্দর, জীব সুন্দর, সুন্দর এই পৃথিবী
    যতই দেখবে ততই মুগ্ধ হবে।
    আলোকময়ী প্রভাত দিচ্ছে আলোক ঝলক
    আলস্যপরতা ছেড়ে জেগে ওঠে মন
    দেখার বাসনা জাগে আসমুদ্র হিমাচল
    তীব্র মায়ায় আবদ্ধ করে দেয় জীবন।

 

  • আমার পতাকা
    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু
  • আমার পতাকা আমার রক্ত
    মুক্তিযুদ্ধের ছবি,
    মনের ভেতরে আজও ঝড় তোলে
    গান কবিতা সবই।
  • আমার পতাকা আমরা বাঙালি
    পরিচয় বিনিময়,
    সাতই মার্চের অমর ভাষণ
    বিশ্বের বিস্ময়।
  • আমার পতাকা মুক্তিসেনার
    যুদ্ধের মাঠে লড়াই,
    আমরা বাঙালি বীরের সাথে
    তাইতো করি বরাই।
  • আমার পতাকা স্বাধীন রাষ্ট্র
    লাল সবুজের দেশ,
    বাংলা জুড়ে তুমুল যুদ্ধ
    নয় মাসে হলো শেষ।

 

  • পাখির ডাক
    রুস্তম আলী, ভারত
  • পাখির ডাকে ঘুমায় আর
    পাখির ডাকে উঠি,
    সারাটা দিন দেখি গাছে
    পাখির ছুটাছুটি।
    মাঠ ভরা দেখি সবুজ
    ক্ষেতের বাহার
    উড়ে এসে পাখিরা সব
    করে তাতে আহার,
    আরও কত দেখি গাছে
    পাখির বসে মেলা
    মনের উচ্ছাসে খুশির
    করে সব খেলা।
    পাখির সাথে থাকি যেন
    পাখি নিত্য সঙ্গী
    চোখ মেললে দেখি তাই
    পাখির অঙ্গিভঙ্গি।

 

  • নেত্রী অদ্বিতীয়া
    কাঁকন কিবরিয়া
  • নেত্রী মোদের শেখ হাসিনা,
    অন্য কারো নাম বলিনা।
    তাহার হাতে দেশের চাবি,
    পূরণ করেন মোদের দাবি।
    বৈঠা হাতে নৌকা নিয়ে,
    চলছেন সাগর পাড়ি দিয়ে।
    এগিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্ন পূরণে,
    দেশকে বসিয়েছেন উঁচু আসনে।
    এদেশে বইছে উন্নতির ধারা,
    নেত্রী ছাড়া করতো কারা?
    নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে,
    বাস্তবে রূপ যাচ্ছেন দিয়ে।
    থেমে থাকার দিন নয় এখন,
    বলেন নেত্রী যখন তখন।
    আঁধার সরিয়ে আনতে আলো,
    নেত্রী পারেন খুবই ভালো।
    লক্ষ্য তাহার উপর পানে,
    বোঝান নিজের বিচক্ষণে।
    হারানোর দুঃখ চাপা রেখে,
    যাচ্ছেন উন্নতির স্বপ্ন দেখে।
    বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন সেটা,
    এটা শেষ করে ধরছেন ওটা।
    পিতার কাছে এসব শিখে,
    হাসি ফোটাচ্ছেন সবার মুখে।
    একেই বলে যোগ্য কন্যা,
    ভয় করেনা ঝড় ও বন্যা।
    নির্ভীক এই কন্যার পাশে,
    আছি আমরা থাকবো মিশে।
    এগিয়ে চলো নেত্রী তুমি,
    সাজাও নিজের মাতৃভূমি।

 

  • আমি ক্লান্ত
    হালিমা খাতুন সুলতানা
  • মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
    ধরা ছেড়ে যাই,
    প্রাণের মাঝে লুকানো সব
    কষ্ট শুধু পাই।
    আমি ক্লান্ত, বড়ই ক্লান্ত,
    জীবন খেলায় ভাই,
    সুখের পাখির খুঁজে জগত
    ছেড়ে যাচ্ছি তাই।
    সুখে থেকো আপন স্বজন
    আমি কারো নয়,
    কষ্টের নদীর স্রোত অনেক
    পেলাম শুধু ভয়।
    প্রভুর কাছে বিচার দিলাম
    আপন হলো পর,
    কষ্টের মাঝে আমায় ফেলে
    স্বার্থের হাতটা ধর।
    নয়ন জুড়ে দুঃখের আগুন
    নেই তো কোথাও ফুল,
    জীবন গল্পের প্রতি পাতায়
    সকল লেখা ভুল।
    আমি ক্লান্ত, বড়ই ক্লান্ত,
    মুক্তি শুধু চাই,
    মায়ার বাঁধন থেকে আমার
    মুক্তি কেনো নাই ?

 

  • হতেম যদি পাখি
    মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর,বগুড়া।
  • সবুজ শ্যামল এই ধরাতে
    হতেম যদি পাখি,
    মুয়াজ্জিনের সুরে ধরায়
    করতাম ডাকাডাকি।
    পাখির মতো থাকতো যদি
    দু’ পাশে মোর ডানা,
    স্বাধীন মতো ঘুরতাম ধরায়
    করতো না কেউ মানা।
    উড়ে উড়ে যেতাম আমি
    প্রিয় নবীর দেশে,
    থাকতাম সেথায় চিরদিনি
    নবীক ভালোবেসে।।

 

  • জীবনের গল্প
    ইঞ্জিঃ মোঃ মনসুরুল হক
  • জেগে জেগে পাহারার রাত কাটে
    এমনি করে কতদিন নির্ঘুম রাত
    জীবনের আশা গুলি ধুলিতে মিলায়!
    জীবনের গল্প হয়তো খুবই ছোট
    এরিই মাঝে সবকিছু নিয়ে চলতে হয়
    আশার আলো বুকে নিয়ে বাঁচতে হয়!
    কোনটা সুখ আর কোনটা দুঃখ বুঝিনি
    তাইতো সবার চোখে প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছি
    মন খুলে যায় না বলা মনের দুটি কথা
    কে শত্রু আর কে মিত্র বুঝা বড় দায়!
    আপন ভাবি যারে সেতো আপন নয়
    লোক দেখানো মায়ায় জালে ডুবে গেছি
    চক্ষুশোলে পরিণত মানুষে যা খুশী কয়!
    সুযোগের সৎ ব্যবহার সকলেই করে
    নিজে আনন্দ পেতে তিলকে তাল বানায়
    অন্তরের কষ্টটা বুঝানো এ সমাজের দায়!
    আপন কষ্ট আপন বুকে করিয়া যতন
    কতদিন যুদ্ধ করে জীবনে বাঁচা যায়
    হীন মন্য লোকেরা বড্ড বেশী মজা পায়!
    কোমল মনে আঘাত কতটা বুঝেনা তারা
    হৃদয়হীনের মত ঠাট্টা করে কি সুখ পায়
    হৃদয়ে কষ্ট লুকিয়ে বলি ভালো আছি!
    যতই পালিয়ে থাকি ওদের হাত থেকে
    অযথা কোঁচা দিয়ে ঘুমন্ত বেদনা জাগায়
    তাতেই বুজি তারা আনন্দ বেশী পায়!

 

  • বইয়ের মাঝে বিশ্ব দেখি
    সাঈদুর রহমান লিটন , ফরিদপুর
  • সংখ্যা দিয়ে অঙ্ক করি
    বর্ণ দিয়ে পড়া পড়ি
    বাড়ে সবার জ্ঞান
    পড়ার মাঝেই খুঁজতে থাকি
    লেখার মাঝেই আঁকা আঁকি
    তাদের মাঝেই ধ্যান।
    বইয়ের মাঝেই বিশ্ব দেখি
    বই পড়ে তাই লিখন লিখি
    পড়েই ফুটে চোখ
    দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
    পড়া থাকে যার অন্তরে
    তারাই বিশ্বলোক।

 

  • কোলা ব্যাঙ
    শাণিত সাহা স্নিগ্ধ
  • ডোবার মাঝে থাক
    কিছু কোলা ব্যাঙ,
    সারাটাদিন ডাকে
    শুধু ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।
    সারাবেলা করে খেলা
    ছোট্ট বোনের সাথে
    মা বসে তাঁদের জন্য
    ফুলের মালা গাঁথে

 

  • আমার বাবাই
    কল্পনা দাস
  • তোমায় ঘিরেই স্বপ্ন আমার
    তোমায় নিয়েই আশা
    তোমায় ঘিরেই সুখগুলো সব
    বেঁধেছে যে বাসা।
    নভেম্বরের বারো তারিখ
    এসেছো কোল জুড়ে
    তোমার মুখের হাসি দেখলে
    কষ্টেরা যায় দূরে।
    আলতো হাতের পরশ পেয়ে
    হয়েছি যে ধন্য
    তোমায় পেয়ে জীবন আমার
    ষোলো আনাই পূর্ণ।
    মানুষ নামের গুণগুলো সব
    ফুটুক তোমার মাঝে
    চলাফেরা, কথাবার্তায়
    স্ফুরিত হোক কাজে।
    অনেক অনেক ভালোবাসা
    রইলো তোমার তরে
    মন্দকিছু দূরে রেখে
    জীবনকে নিও গড়ে।

 

  • ঈশ্বরের সাথে
    রুবী শামসুন নাহার, ঢাকা
  • মাঝে মাঝে আমি ঈশ্বরের ভূমিকা নিয়ে ভাবি,
    তিনি কোথায় না আছেন?
    তিনি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করেন কত না ভাবে।
    তবে যে
    প্রাসাদসম বাড়ি,
    ডাকাবুকো গাড়ি
    সুখী হবার এতো দুর্মূল্য উপকরণ,
    এতো যে সকাল থেকে সন্ধ্যা
    কায়িক ও মানসিক শ্রম জীবনের জন্য কেন?
    কেন এতো সূযোগ সুবিধা পায় ধনী?
    এতো উন্নয়ন চারিদিক তবুও মানুষের ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার কমেনা কেন?
    মূর্খ থাকে মঞ্চে, জ্ঞানী থাকে শ্রোতা হয়ে পেছনে, তাকে কেউ চেনেনা,
    সে মুখ লুকিয়ে বসে থাকে শ্রোতা হয়ে,
    তামাশা ভরা দুনিয়ায় তামাশা দেখে-
    সুবিধাভোগী ও তৈল মর্দনকারী
    সব জায়গা দখল করে নেয়।
    সব জায়গা যদি ডেভিলে ভরে যায় তবে মানুষের অবস্থান
    হবে কোথায়?
    মানুষের প্রয়োজন কি করে মেটাবে?
    ঈশ্বর সর্বত্র আছে তবুও মানুষ
    এতো অসহায় –
    ঈশ্বর তুমি সময়মতো সকলের কাছে পৌঁছাও
    সজ্জনের আজ প্রয়োজন তোমাকে ঈশ্বর!

 

  • বেলা শেষে
    মোঃ আয়ুব আলী
  • পঁচিশ বছর কিশোর গেল
    সংসার তার পরে
    বিশ বছর খেটে গেলাম
    অভাগা সংসারে !
    মাথার ঘাম পায়ে ফেলে
    দেহের শক্তি খুয়ে
    সুখের লাগি করছি লড়াই
    হাসি সবার মুখে।
    জীবন যৌবন শেষ করলাম
    আপন জনের জন্য
    মুকুট হয়ে ছিলাম সবার
    সবাই ছিলো ধন্য।
    পঞ্চাশ যখন পার করলাম
    কর্মে এলো ঢিলা
    শরীর এখন আগের মতো
    নেই না ওতো বোঝা !
    আপন জনার চাওয়া পাওয়া
    বাড়ছে দিনে দিনে
    আবির এখন অস্ত বেলায়
    আছি গোধূলি লগ্নে!
    অভাব এখন দেহের বসন
    সত্তর বছরে পরে
    ধীরে ধীরে বাড়ছে আমার
    পর নির্ভর ওরে !
    যে যার মতো চলছে সবাই
    নেই না খবর কেউ
    দুঃখের রোদন বলবো কারে
    লাগে হৃদয় ঢেউ !!
    ম্যাসেজ টা তাই বিশ্ব বাবার
    একটু ভেবে দেখো
    প্রয়োজন এখন ফুরায় গেলো
    ভাঙ্গা কুলায় থাকো !!

 

  • গল্পে গল্পে শেখা

♦খলিফা হারুনুর রশিদ পানি পান করতে যাবেন, গ্লাস ঠিক ঠোঁটের কাছে নিয়েছেন, এমন সময় হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “আমিরুল মুমিনীন! একটু থামুন। পানি পান করার আগে আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন।”

খলিফা বললেন, “বলো কি জানতে চাও?”

বহলুল (রহঃ) বললেন, “মনে করুন আপনি প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত হয়ে এমন মাঠে আছেন যেখানে পানি নাই। পিপাসায় আপনার প্রাণ ওষ্ঠাগত। এমন অবস্থায় আপনি এক গ্লাস পানির জন্য কতটা মূল্য ব্যয় করবেন?”

খলিফা বললেন, “যেহেতু পানি না পেলে আমার মৃত্যু হবে তাই আমার পুরো সম্পত্তিও ব্যয় করে দিতে পারবো।”

হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “ঠিক আছে এবার বিসমিল্লাহ বলে পানি পান করেন।”

খলিফা পানি পান করলেন। এবার হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “আমার আর একটি প্রশ্ন আছে।”

খলিফা বললেন, “বলো।”

বহলুল (রহঃ) বললেন, “এই পানি যদি আপনার শরীর থেকে না বের হয়, পেটেই জমা থাকে। প্রসাব বন্ধ হয়ে যায়, সেই পানি বের করবার জন্য কত টাকা ব্যয় করবেন?”

-প্রসাব বন্ধ হলে তো আমি সহ্য করতে পারবো না। মারা যাবো। জীবন বাঁচাতে একজন ডাক্তার যতটা চায় ততটাই দিবো। আমার পুরো রাজত্ব চাইলেও দিয়ে দিবো।”

হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, তাহলে বোঝা গেল আপনার পুরো রাজত্ব এক গ্লাস পানির দামের সমানও নয়। মাত্র এক গ্লাস পানি পান করতে বা বের করতে আপনি পুরো রাজত্বও দিয়ে দিতে চান। তাহলে কত গ্লাস পানি নিয়মিত পান করেন আর বের করেন, এটা একটু ভাবেন আর এই নেয়ামত যিনি দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করেন।”

শরীর থেকে পানি বের করার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে অঙ্গ তাহলো কিডনি। করাচির এক ডাক্তারকে (কিডনি বিশেষজ্ঞ) একবার একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, “বিজ্ঞান এখন এতো উন্নত, আপনারা একজনের কিডনি অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন তাহলে কৃত্রিম কিডনি তৈরি করতে পারছেন না কেন?”

ডাক্তারের উত্তরটি ছিলো খুবই আশ্চর্যজনক।

তিনি বলেছিলেন, “সায়েন্সের এই উন্নতি সত্ত্বেও কৃত্রিম কিডনি তৈরি করা খুব কঠিন। কারণ আল্লাহ তায়ালা কিডনির ভেতরে যে চালনি যুক্ত করেছেন তা খুব সুক্ষ্ম এবং পাতলা। এখনো পর্যন্ত এমন যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি যা এমন সুক্ষ্ম ও পাতলা চালনি তৈরি করতে পারে। আর যদি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে চালনি তৈরি করাও হয় তবুও কিডনির ভেতর এমন একটি জিনিস আছে যা তৈরি করা আমাদের ক্ষমতার বাইরে। জিনিসটি হলো একটি মস্তিষ্ক (sensor)। এই মস্তিষ্ক ফায়সালা করে যে, এই মানুষের শরীরে কতটুকু পানি রাখা চাই।

 

মোহাম্মদ আফজাল হোসেন মাসুম
সাহিত্য সম্পাদক
বাংলাদেশের বার্তা
sampadok.afjal@gmail.com

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বাংলাদেশের বার্তার “সাহিত্য কন্ঠ”

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:০৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
  • বাসনা
    ফরিদা আক্তার
  • কেন এত বাঁচার ইচ্ছা জাগে মনে
    ছুটে যেতে চাই মন মায়ার টানে
    স্নেহ ভালবাসায় ঘেরা চারপাশ
    মনে যতই থাকুক হাঁ হতাশ।
    অভিমান একটু একটু করে দূরে সরে যায়
    আতপচ্ছায়ায় পায়ে পড়ে মায়াবেড়ী
    হাসি ফুটে মুখে বাঁচার আশায়।
    আধফোটা ফুল বিলায় আতরগন্ধ
    অশরীরে কিছু হাটে সন্তর্পনে
    পুরো অবয়বে।
    খুব গভীরতায় বলে কানে কানে দিয়ে আড়হাসি
    জীবন সুন্দর, জীব সুন্দর, সুন্দর এই পৃথিবী
    যতই দেখবে ততই মুগ্ধ হবে।
    আলোকময়ী প্রভাত দিচ্ছে আলোক ঝলক
    আলস্যপরতা ছেড়ে জেগে ওঠে মন
    দেখার বাসনা জাগে আসমুদ্র হিমাচল
    তীব্র মায়ায় আবদ্ধ করে দেয় জীবন।

 

  • আমার পতাকা
    চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু
  • আমার পতাকা আমার রক্ত
    মুক্তিযুদ্ধের ছবি,
    মনের ভেতরে আজও ঝড় তোলে
    গান কবিতা সবই।
  • আমার পতাকা আমরা বাঙালি
    পরিচয় বিনিময়,
    সাতই মার্চের অমর ভাষণ
    বিশ্বের বিস্ময়।
  • আমার পতাকা মুক্তিসেনার
    যুদ্ধের মাঠে লড়াই,
    আমরা বাঙালি বীরের সাথে
    তাইতো করি বরাই।
  • আমার পতাকা স্বাধীন রাষ্ট্র
    লাল সবুজের দেশ,
    বাংলা জুড়ে তুমুল যুদ্ধ
    নয় মাসে হলো শেষ।

 

  • পাখির ডাক
    রুস্তম আলী, ভারত
  • পাখির ডাকে ঘুমায় আর
    পাখির ডাকে উঠি,
    সারাটা দিন দেখি গাছে
    পাখির ছুটাছুটি।
    মাঠ ভরা দেখি সবুজ
    ক্ষেতের বাহার
    উড়ে এসে পাখিরা সব
    করে তাতে আহার,
    আরও কত দেখি গাছে
    পাখির বসে মেলা
    মনের উচ্ছাসে খুশির
    করে সব খেলা।
    পাখির সাথে থাকি যেন
    পাখি নিত্য সঙ্গী
    চোখ মেললে দেখি তাই
    পাখির অঙ্গিভঙ্গি।

 

  • নেত্রী অদ্বিতীয়া
    কাঁকন কিবরিয়া
  • নেত্রী মোদের শেখ হাসিনা,
    অন্য কারো নাম বলিনা।
    তাহার হাতে দেশের চাবি,
    পূরণ করেন মোদের দাবি।
    বৈঠা হাতে নৌকা নিয়ে,
    চলছেন সাগর পাড়ি দিয়ে।
    এগিয়ে যাচ্ছেন স্বপ্ন পূরণে,
    দেশকে বসিয়েছেন উঁচু আসনে।
    এদেশে বইছে উন্নতির ধারা,
    নেত্রী ছাড়া করতো কারা?
    নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে,
    বাস্তবে রূপ যাচ্ছেন দিয়ে।
    থেমে থাকার দিন নয় এখন,
    বলেন নেত্রী যখন তখন।
    আঁধার সরিয়ে আনতে আলো,
    নেত্রী পারেন খুবই ভালো।
    লক্ষ্য তাহার উপর পানে,
    বোঝান নিজের বিচক্ষণে।
    হারানোর দুঃখ চাপা রেখে,
    যাচ্ছেন উন্নতির স্বপ্ন দেখে।
    বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন সেটা,
    এটা শেষ করে ধরছেন ওটা।
    পিতার কাছে এসব শিখে,
    হাসি ফোটাচ্ছেন সবার মুখে।
    একেই বলে যোগ্য কন্যা,
    ভয় করেনা ঝড় ও বন্যা।
    নির্ভীক এই কন্যার পাশে,
    আছি আমরা থাকবো মিশে।
    এগিয়ে চলো নেত্রী তুমি,
    সাজাও নিজের মাতৃভূমি।

 

  • আমি ক্লান্ত
    হালিমা খাতুন সুলতানা
  • মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে
    ধরা ছেড়ে যাই,
    প্রাণের মাঝে লুকানো সব
    কষ্ট শুধু পাই।
    আমি ক্লান্ত, বড়ই ক্লান্ত,
    জীবন খেলায় ভাই,
    সুখের পাখির খুঁজে জগত
    ছেড়ে যাচ্ছি তাই।
    সুখে থেকো আপন স্বজন
    আমি কারো নয়,
    কষ্টের নদীর স্রোত অনেক
    পেলাম শুধু ভয়।
    প্রভুর কাছে বিচার দিলাম
    আপন হলো পর,
    কষ্টের মাঝে আমায় ফেলে
    স্বার্থের হাতটা ধর।
    নয়ন জুড়ে দুঃখের আগুন
    নেই তো কোথাও ফুল,
    জীবন গল্পের প্রতি পাতায়
    সকল লেখা ভুল।
    আমি ক্লান্ত, বড়ই ক্লান্ত,
    মুক্তি শুধু চাই,
    মায়ার বাঁধন থেকে আমার
    মুক্তি কেনো নাই ?

 

  • হতেম যদি পাখি
    মুহাম্মদ আলম জাহাঙ্গীর,বগুড়া।
  • সবুজ শ্যামল এই ধরাতে
    হতেম যদি পাখি,
    মুয়াজ্জিনের সুরে ধরায়
    করতাম ডাকাডাকি।
    পাখির মতো থাকতো যদি
    দু’ পাশে মোর ডানা,
    স্বাধীন মতো ঘুরতাম ধরায়
    করতো না কেউ মানা।
    উড়ে উড়ে যেতাম আমি
    প্রিয় নবীর দেশে,
    থাকতাম সেথায় চিরদিনি
    নবীক ভালোবেসে।।

 

  • জীবনের গল্প
    ইঞ্জিঃ মোঃ মনসুরুল হক
  • জেগে জেগে পাহারার রাত কাটে
    এমনি করে কতদিন নির্ঘুম রাত
    জীবনের আশা গুলি ধুলিতে মিলায়!
    জীবনের গল্প হয়তো খুবই ছোট
    এরিই মাঝে সবকিছু নিয়ে চলতে হয়
    আশার আলো বুকে নিয়ে বাঁচতে হয়!
    কোনটা সুখ আর কোনটা দুঃখ বুঝিনি
    তাইতো সবার চোখে প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছি
    মন খুলে যায় না বলা মনের দুটি কথা
    কে শত্রু আর কে মিত্র বুঝা বড় দায়!
    আপন ভাবি যারে সেতো আপন নয়
    লোক দেখানো মায়ায় জালে ডুবে গেছি
    চক্ষুশোলে পরিণত মানুষে যা খুশী কয়!
    সুযোগের সৎ ব্যবহার সকলেই করে
    নিজে আনন্দ পেতে তিলকে তাল বানায়
    অন্তরের কষ্টটা বুঝানো এ সমাজের দায়!
    আপন কষ্ট আপন বুকে করিয়া যতন
    কতদিন যুদ্ধ করে জীবনে বাঁচা যায়
    হীন মন্য লোকেরা বড্ড বেশী মজা পায়!
    কোমল মনে আঘাত কতটা বুঝেনা তারা
    হৃদয়হীনের মত ঠাট্টা করে কি সুখ পায়
    হৃদয়ে কষ্ট লুকিয়ে বলি ভালো আছি!
    যতই পালিয়ে থাকি ওদের হাত থেকে
    অযথা কোঁচা দিয়ে ঘুমন্ত বেদনা জাগায়
    তাতেই বুজি তারা আনন্দ বেশী পায়!

 

  • বইয়ের মাঝে বিশ্ব দেখি
    সাঈদুর রহমান লিটন , ফরিদপুর
  • সংখ্যা দিয়ে অঙ্ক করি
    বর্ণ দিয়ে পড়া পড়ি
    বাড়ে সবার জ্ঞান
    পড়ার মাঝেই খুঁজতে থাকি
    লেখার মাঝেই আঁকা আঁকি
    তাদের মাঝেই ধ্যান।
    বইয়ের মাঝেই বিশ্ব দেখি
    বই পড়ে তাই লিখন লিখি
    পড়েই ফুটে চোখ
    দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
    পড়া থাকে যার অন্তরে
    তারাই বিশ্বলোক।

 

  • কোলা ব্যাঙ
    শাণিত সাহা স্নিগ্ধ
  • ডোবার মাঝে থাক
    কিছু কোলা ব্যাঙ,
    সারাটাদিন ডাকে
    শুধু ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।
    সারাবেলা করে খেলা
    ছোট্ট বোনের সাথে
    মা বসে তাঁদের জন্য
    ফুলের মালা গাঁথে

 

  • আমার বাবাই
    কল্পনা দাস
  • তোমায় ঘিরেই স্বপ্ন আমার
    তোমায় নিয়েই আশা
    তোমায় ঘিরেই সুখগুলো সব
    বেঁধেছে যে বাসা।
    নভেম্বরের বারো তারিখ
    এসেছো কোল জুড়ে
    তোমার মুখের হাসি দেখলে
    কষ্টেরা যায় দূরে।
    আলতো হাতের পরশ পেয়ে
    হয়েছি যে ধন্য
    তোমায় পেয়ে জীবন আমার
    ষোলো আনাই পূর্ণ।
    মানুষ নামের গুণগুলো সব
    ফুটুক তোমার মাঝে
    চলাফেরা, কথাবার্তায়
    স্ফুরিত হোক কাজে।
    অনেক অনেক ভালোবাসা
    রইলো তোমার তরে
    মন্দকিছু দূরে রেখে
    জীবনকে নিও গড়ে।

 

  • ঈশ্বরের সাথে
    রুবী শামসুন নাহার, ঢাকা
  • মাঝে মাঝে আমি ঈশ্বরের ভূমিকা নিয়ে ভাবি,
    তিনি কোথায় না আছেন?
    তিনি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করেন কত না ভাবে।
    তবে যে
    প্রাসাদসম বাড়ি,
    ডাকাবুকো গাড়ি
    সুখী হবার এতো দুর্মূল্য উপকরণ,
    এতো যে সকাল থেকে সন্ধ্যা
    কায়িক ও মানসিক শ্রম জীবনের জন্য কেন?
    কেন এতো সূযোগ সুবিধা পায় ধনী?
    এতো উন্নয়ন চারিদিক তবুও মানুষের ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার কমেনা কেন?
    মূর্খ থাকে মঞ্চে, জ্ঞানী থাকে শ্রোতা হয়ে পেছনে, তাকে কেউ চেনেনা,
    সে মুখ লুকিয়ে বসে থাকে শ্রোতা হয়ে,
    তামাশা ভরা দুনিয়ায় তামাশা দেখে-
    সুবিধাভোগী ও তৈল মর্দনকারী
    সব জায়গা দখল করে নেয়।
    সব জায়গা যদি ডেভিলে ভরে যায় তবে মানুষের অবস্থান
    হবে কোথায়?
    মানুষের প্রয়োজন কি করে মেটাবে?
    ঈশ্বর সর্বত্র আছে তবুও মানুষ
    এতো অসহায় –
    ঈশ্বর তুমি সময়মতো সকলের কাছে পৌঁছাও
    সজ্জনের আজ প্রয়োজন তোমাকে ঈশ্বর!

 

  • বেলা শেষে
    মোঃ আয়ুব আলী
  • পঁচিশ বছর কিশোর গেল
    সংসার তার পরে
    বিশ বছর খেটে গেলাম
    অভাগা সংসারে !
    মাথার ঘাম পায়ে ফেলে
    দেহের শক্তি খুয়ে
    সুখের লাগি করছি লড়াই
    হাসি সবার মুখে।
    জীবন যৌবন শেষ করলাম
    আপন জনের জন্য
    মুকুট হয়ে ছিলাম সবার
    সবাই ছিলো ধন্য।
    পঞ্চাশ যখন পার করলাম
    কর্মে এলো ঢিলা
    শরীর এখন আগের মতো
    নেই না ওতো বোঝা !
    আপন জনার চাওয়া পাওয়া
    বাড়ছে দিনে দিনে
    আবির এখন অস্ত বেলায়
    আছি গোধূলি লগ্নে!
    অভাব এখন দেহের বসন
    সত্তর বছরে পরে
    ধীরে ধীরে বাড়ছে আমার
    পর নির্ভর ওরে !
    যে যার মতো চলছে সবাই
    নেই না খবর কেউ
    দুঃখের রোদন বলবো কারে
    লাগে হৃদয় ঢেউ !!
    ম্যাসেজ টা তাই বিশ্ব বাবার
    একটু ভেবে দেখো
    প্রয়োজন এখন ফুরায় গেলো
    ভাঙ্গা কুলায় থাকো !!

 

  • গল্পে গল্পে শেখা

♦খলিফা হারুনুর রশিদ পানি পান করতে যাবেন, গ্লাস ঠিক ঠোঁটের কাছে নিয়েছেন, এমন সময় হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “আমিরুল মুমিনীন! একটু থামুন। পানি পান করার আগে আমার একটি প্রশ্নের উত্তর দিন।”

খলিফা বললেন, “বলো কি জানতে চাও?”

বহলুল (রহঃ) বললেন, “মনে করুন আপনি প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত হয়ে এমন মাঠে আছেন যেখানে পানি নাই। পিপাসায় আপনার প্রাণ ওষ্ঠাগত। এমন অবস্থায় আপনি এক গ্লাস পানির জন্য কতটা মূল্য ব্যয় করবেন?”

খলিফা বললেন, “যেহেতু পানি না পেলে আমার মৃত্যু হবে তাই আমার পুরো সম্পত্তিও ব্যয় করে দিতে পারবো।”

হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “ঠিক আছে এবার বিসমিল্লাহ বলে পানি পান করেন।”

খলিফা পানি পান করলেন। এবার হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, “আমার আর একটি প্রশ্ন আছে।”

খলিফা বললেন, “বলো।”

বহলুল (রহঃ) বললেন, “এই পানি যদি আপনার শরীর থেকে না বের হয়, পেটেই জমা থাকে। প্রসাব বন্ধ হয়ে যায়, সেই পানি বের করবার জন্য কত টাকা ব্যয় করবেন?”

-প্রসাব বন্ধ হলে তো আমি সহ্য করতে পারবো না। মারা যাবো। জীবন বাঁচাতে একজন ডাক্তার যতটা চায় ততটাই দিবো। আমার পুরো রাজত্ব চাইলেও দিয়ে দিবো।”

হযরত বহলুল (রহঃ) বললেন, তাহলে বোঝা গেল আপনার পুরো রাজত্ব এক গ্লাস পানির দামের সমানও নয়। মাত্র এক গ্লাস পানি পান করতে বা বের করতে আপনি পুরো রাজত্বও দিয়ে দিতে চান। তাহলে কত গ্লাস পানি নিয়মিত পান করেন আর বের করেন, এটা একটু ভাবেন আর এই নেয়ামত যিনি দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করেন।”

শরীর থেকে পানি বের করার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় যে অঙ্গ তাহলো কিডনি। করাচির এক ডাক্তারকে (কিডনি বিশেষজ্ঞ) একবার একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, “বিজ্ঞান এখন এতো উন্নত, আপনারা একজনের কিডনি অন্যের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন তাহলে কৃত্রিম কিডনি তৈরি করতে পারছেন না কেন?”

ডাক্তারের উত্তরটি ছিলো খুবই আশ্চর্যজনক।

তিনি বলেছিলেন, “সায়েন্সের এই উন্নতি সত্ত্বেও কৃত্রিম কিডনি তৈরি করা খুব কঠিন। কারণ আল্লাহ তায়ালা কিডনির ভেতরে যে চালনি যুক্ত করেছেন তা খুব সুক্ষ্ম এবং পাতলা। এখনো পর্যন্ত এমন যন্ত্র আবিষ্কার হয়নি যা এমন সুক্ষ্ম ও পাতলা চালনি তৈরি করতে পারে। আর যদি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে চালনি তৈরি করাও হয় তবুও কিডনির ভেতর এমন একটি জিনিস আছে যা তৈরি করা আমাদের ক্ষমতার বাইরে। জিনিসটি হলো একটি মস্তিষ্ক (sensor)। এই মস্তিষ্ক ফায়সালা করে যে, এই মানুষের শরীরে কতটুকু পানি রাখা চাই।

 

মোহাম্মদ আফজাল হোসেন মাসুম
সাহিত্য সম্পাদক
বাংলাদেশের বার্তা
sampadok.afjal@gmail.com