বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ছাপিয়ে বিশ্ববন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন: খুবি ভিসি
- আপডেট সময় : ০৫:৩০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২
- / ৯৬১৫ বার পড়া হয়েছে
আবির হাসান, খুবি প্রতিনিধি ॥
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ভিসি প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড একটি হত্যাকাণ্ড নয়। এদিন বাঙালি জাতির আশা, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নকে হত্যা করে দেশকে পিছিয়ে দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ছাপিয়ে বিশ্বে একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন।
১৫ই আগস্ট (সোমবার) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববন্ধু হওয়া অনেকেই পছন্দ করেননি। জনপ্রিয় নেতা থেকে অপ্রিয় নেতায় পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। বাকশাল ও ব্যাংক সেক্টর নিয়ে নানা রকম প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা গেলেও তাঁর চেতনাকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
খুবিতে শোক দিবসের কর্মসূচির শুরুতে সকাল ৯টায় শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে কালোব্যাজ ধারণ, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোকর্যালি শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে হাদী চত্ত্বর ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালজয়ী মুজিব’ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
পরে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ডিনবৃন্দ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) উপস্থিত ছিলেন।
এরপরপরই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, বিভিন্ন স্কুল (অনুষদ), ডিসিপ্লিনসমূহ (বিভাগ), আবাসিক হল, শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ ও বিভিন্ন সংগঠন এবং কর্মচারীবৃন্দের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হলেও প্রভোস্ট প্রফেসর ড. তানজিল সওগাতের নেতৃত্বে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সকাল ৯.৩০ মিনিটে ক্যাম্পাসে সোনালু, বনসোনালু, ম্যানগ্রোভ লাল কাঁকড়া প্রজাতি এবং তাল ও বকুলের চারা রোপণ করা হয়।
এছাড়া বেলা ১১টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক, প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান। আলোচনাকালে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ এর সুদীর্ঘ ইতিহাস, ৭৫ এর পূর্ব ও পরবর্তী প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, তিনি খোকা থেকে মুজিবুর, মুজিব ভাই, বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা পর্যন্ত উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন। ভাষা আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দীও তিনি। চাইলেই কেউ তার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে পারবে না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেই হা না ভোটের মাধ্যমে মসনদে বসে স্বাধীনতা বিরোধীদের পুনর্বাসিত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করেছেন। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেনাবাহিনী, পুলিশ, রাজনৈতিক ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তোলা, প্রতিবাদ না করা ছিলো দেশ ও জাতির জন্য সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত, প্রহসনমূলক।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট রাতে নিহত শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে সেখানে আইন ডিসিপ্লিন কর্তৃক প্রকাশিত স্মরণিকা ‘অগ্নিগিরির অস্তাচল’ এর ৫ম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন উপাচার্য।
এরপর সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘হাসিনা: এ ডটার্স টেল’ প্রদর্শিত হয়। এছাড়া বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকাল ৯.৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় মন্দিরে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া কোরআনখানি অনুষ্ঠিত এবং এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- রাতে হলে ৫ মিনিট নিষ্প্রদীপকরণ কর্মসূচি।