ছাতকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডাকাতি মামলার রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার – ৫
- আপডেট সময় : ০২:১৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জানুয়ারী ২০২৩
- / ৯৬২৬ বার পড়া হয়েছে
সিলেট প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের তিন সদস্য ও অন্যান্য সহযোগীদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে আনফর ওরফে আনহার, সাইফুল ইসলাম সফিক ও আলি হোসেন স্বেচ্ছায় এ স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সদস্য আনফর ওরফে আনহার(২৪) সিলেট জেলার ওসমানীনগর থানার কালাচরা দত্তগ্রামের মৃত. সফর আলীর ছেলে, সাইফুল ইমলাম ওরফে সফিক (২৩) একই থানার রবিদাস পালপুর গ্রামের আলিম উল্লাহর ছেলে, আলী হোসেন (২৮) আইলাকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল করিম এর ছেলে।
জানা যায়, গত সোমবার ২৬ ডিসেম্বর রাতে জালালপুর গ্রামে প্রাবসীর বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। অস্ত্রধারী ১০-১৫ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাত দল হানা দিয়ে ১৯ ভরি স্বর্র্ণালংকার, নগদ ৯৩ হাজার টাকা, মোবাইলসেটসহ প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগীতায় ৪ জন ডাকাতকে আটক করা হয়।
এতে ডাকাত দলের হামলায় প্রবাসী ঐ পবিারের ৭ সদস্য আহত হন। ঘটনার খবর পেয়ে ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমান এর নেতৃত্বে এস আই গোলাম ফাত্তাহ মুরশেদ চৌধুরী, এসআই আসাদুজ্জামান, এসআই মুইনুল, এসআই মোশারফ, এসআই শাহিন হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌছে জগন্নাতপুর উপজেলার চকতিলক গ্রামের বেলায়েতের ছেলে ডাকাত জুয়েল ওরফে লাল মিয়া(২৯), একই উপজেলার জামালপুর (রৌডর) গ্রামের মৃত. শহিদ উল্লাহর ছেলে সাইফুল ওরফে সাইকুল (২৩), সাইফুল ইমলাম ওরফে সফিক (২৩), আনফর ওরফে আনহার (২৪) কে গ্রেফতার করেন। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত একটি পাইপ গান, ৩ টি কাটুজ, ১ টি চাইনিজ কুরাল ও ২ টি তালা জব্দ করা হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক, ছাতক সার্কেল এর নেতৃত্বে ছাতক থানা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আরিফুল আলম, এস আই গোলাম ফাত্তাহ মুরশেদ চৌধুরী, এসআই শাহিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স সিলেট জেলার ওসমানীগর থানার তাজপুর গয়াসপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে নাজমিন আক্তার মনির বাসার নিচ তলা থেকে আইনাকান্দি গ্রামের মৃত. আব্দুল করিম এর ছেলে আলী হোসেন (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় ডাকাতির ঘটনার ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল ফ্যাশন প্রো, ২টি ঘড়ি ও ১টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। ডাকাত আলী হোসেনের দেওয়া তথ্য মতে ওই দিন বিকেলে সহকারী পুলিশ সুপার রণজয় চন্দ্র মল্লিক, ছাতক সার্কেল, সহকারী পুলিশ সুপার সুভাশীষ, জগন্নাতপুর সার্কেল, ছাতক থানা পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত আরিফুল আলম, এস আই গোলাম ফাত্তাহ মুরশেদ চৌধুরী, জেলার জগন্নাতপুর থানার অফিসার ফোর্স জগন্নাতপুর থানার তিলক গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক ডাকাত আব্দুল কাইয়ুমের কক্ষ থেকে ১২ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
দূর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় জালালপুর গ্রামের মৃত. মাস্টার উস্তার আলীর ছেলে প্রবাসীর ভাই সাইফুল ইসলাম ডালিম বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামী করে গত ২৭ ডিসেম্বর ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় ছাতক থানায় মামলা নং ১৭ দায়ের করা হয়। একই তারিখে পুলিশ বাদী হয়ে অপর একটি অস্ত্র মামলা নং-১৮ দায়ের করা হয়।
অপরদিকে ৪ জন ডাকাতকে আটকের ঘটনায় সাহসিক ভূমিকা পালন করায় প্রবাসী পরিবারের ৮ বছরের শিশু “ব্রিজ একাডেমি”র শিক্ষার্থী এম ডি মাজহারুল আলমকে এওয়ার্ড প্রদানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে ব্রিজ একাডেমি কতৃপক্ষ।
জানা যায়, আগামী ৪ জানুয়ারী ব্রিজ একাডেমি’র কার্নিভাল অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এর হাত থেকেই এম ডি মাজহারুল আলম এওয়ার্ড গ্রহন করবে। বিষটি নিশ্চিত করেছেন ব্রিজ একাডেমি’র চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আইয়ুব করম আলী।
এ বিষয়ে ছাতক থানার এস আই গোলাম ফাত্তাহ মুরশেদ চৌধুরী, তিনজন ডাকাত স্বেচ্ছায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদানের সত্যতা ও প্রবাসীর ভাই ডালিম কতৃক দায়েরি মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ছাতক থানার এসআই মাইনুল ইসলাম বলেন পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, আটকৃতদের দেওয়া তথ্য মতে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে লুন্ঠিত স্বর্ণালংকার উদ্ধার ও অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।