ভোলায় পশ্চিম ইলিশা -১ নামের কুপ থেকে গ্যাস উত্তোলন শুরু
- আপডেট সময় : ০৬:১০:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৩
- / ৯৬২৪ বার পড়া হয়েছে
মোঃআল-আমিন-ভোলা জেলা প্রতিনিধি।
ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা-১ নামের আরও একটি কূপ থেকে পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলন শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)।
এখানে ১৮০ থেকে ২০০ বিসিএফ ঘনফুট গ্যাসের মজুতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ব কোম্পানিটি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৫ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হবে। খনন কাজ শুরুর পৌনে দুই মাসের মাথায় ২৮শে এপ্রিল শুক্রবার থেকে আগুন প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। কূপটি ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মালেরহাট সংলগ্ম স্হানে অবস্থিত।
বাপেক্সের তত্ত্বাবধানে রাশিয়ার তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি গ্যাজপ্রোম এই উত্তোলন কাজ শুরু করেছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি সংকটের মধ্যেই এ নিয়ে ভোলায় শাহবাজপুর ও নর্থ জোনে মোট নয়টি কূপে গ্যাস মজুতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেল। গত ৯ মার্চ ইলিশা-১ নামের এই কূপের খনন কাজ শুরু করে বাপেক্সের প্রতিনিধি দল।
বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কূপটিতে আগুন প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে এখন পরীক্ষা চলছে। মাটির ৩ হাজার ৪৩৩ মিটার গভীরতায় এ গ্যাসের সন্ধান মিলেছে, যা প্রায় ৪ কিলোমিটার নিয়ে বিস্তৃত। ভোলার শাহবাজপুর ও ভোলা নর্থ নামের আলাদা ২টি গ্যাসক্ষেত্রে মোট ৯টি কূপ খনন করা হয়। এসব কূপে মোট গ্যাস মজুদের পরিমাণ ১ দশমিক ৭ টিসিএফ ঘনফুট।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামে ভোলা নর্থ-২ নামে একটি কূপে পরীক্ষামূলকভাবে আগুন প্রজ্জলনের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়। ১৯৯৪-৯৫ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহবাজপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মিলে। এর পর থেকেই একের পর এক গ্যাস কূপের সন্ধান পাওয়া যায়। যা বর্তমানে ৯টি কূপে এসে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের সম্ভাবনা যাচাই করতে আগামী অক্টোবর থেকে নতুন করে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্সের ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ।
ভোলায় আবিষ্কৃত কূপগুলোর মধ্যে থেকে বর্তমানে কেবল ৪টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা গেলেও এর সম্পূর্ণ ব্যবহার হচ্ছে না। বর্তমানে ৪টি বিদ্যুৎ প্লান্টসহ ক্ষুদ্র কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। এতে মাত্র ৮০ এমএমসিএফ গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ প্লান্ট থেকে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে দৈনিক ৪৮৫ মেগাওয়াট।
এদিকে গ্যাসের মজুদ থাকলেও আবাসিক ও বাণিজ্যিক সংযোগের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না।
ফলে মজুদ গ্যাসের ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে না। ভোলায় গ্যাসের মজুদ থাকায় ইতোমধ্যে বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠান শিল্পায়নের কাজ শুরু করেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান জমি অধিগ্রহণ করেছে। ওই সব প্রতিষ্ঠানও ইতিমধ্যে গ্যাসের জন্য আবেদন করেছে। এ ছাড়া আবাসিক সংযোগের জন্য প্রায় দুই হাজার আবেদন ঝুলে আছে।
নতুন গ্যাস সংযোগের জন্য চলতি বছরে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ‘ঘরে ঘরে গ্যাস চাই’ আন্দোলন কমিটি। ভোলায় এমন গ্যাসের সন্ধান মিললেও আবাসিক সংযোগে গ্যাস না পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে অনেকে। ভোলার গ্যাস ভোলাবাসী আদৌ ব্যবহার করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্ন জেগে উঠেছে সবার মনে।