ঢাকা ০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি পাখি অবমুক্ত

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২
  • / ৯৬৩৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মনির হোসেন মাহিন,রাবি প্রতিনিধি:

বিক্রেতার কাছ থেকে ত্রিশটি পাখি উদ্ধারের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ। বুধবার( ০৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান পাখিগুলো অবমুক্ত করেন।

রাবি শিক্ষার্থী ও বন বিভাগ সূত্র জানায়,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থী তারা হলেন রাবি শাখা ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনের রাবি ক্যাম্পাস এম্বাসাডর মিজানুর রহমান তাসিব ও মার্কেটিং বিভাগের মোঃ নাজমুল হোসেন( স্নেক ও এনিমেল রেসকিউয়ার)। তাদের সাথে ছিলেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী ইউনিট। আনিছুরের কাছে পাখি আছে জানতে পেরে রাবি শিক্ষার্থী নাজমুল পাখি কেনার কথা বলে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে নাজমুল ওই পাখি শিকারিকে দেখা করতে বললে তিনি রাজি হয় এবং তাকে ঠিকানা দিয়ে দেয়। সেই অনুসারে নাজমুল একটি মোটরসাইকেল যোগে দিয়ে বিক্রেতার অবস্থানে যায়। এসময় পেছন থেকে তাকে অনুসরণ করে বনবিভাগের কর্মকর্তা ও ডিবি লোকজন।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) নাটোরের আহম্মেদপুর থেকে অসাধু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০টি পাখি উদ্ধার করা হয়। এসময় পাখি বিক্রেতা আনিছুর রহমানকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়। পরে নাটোর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়ের হাবিব তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আনিছুর আহম্মেদপুর চর তেবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম এর ছেলে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, রাজশাহী বনবিভাগের অধীনে প্রায় ১৬টি জেলার কার্যক্রম চালাতে হয়। তারমধ্যে শুধু রাজশাহীতেই অফিস রয়েছে। তাই সব জেলার এলাকাগুলোতে বন বিভাগের একার পক্ষে এই অল্প জনবল দিয়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করা মুশকিল। তাই আমাদের এই কার্যক্রমকে সচল রাখতে শিক্ষার্থীদের সেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের! বিকল্প নেই। রাবির এই শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই এসব বন্যপ্রাণী কেনাবেচা রোধে আমাদের সাথে কাজ করে আসছে। তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। সবারই উচিত এগিয়ে আসা যেনো বন্যপ্রাণীগুলো প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে বেচে থাকতে পারে।

রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাটোর শহরের আহম্মেদপুর চর তেবাড়িয়া এলাকায় ক্রেতা সেজে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুটি কালিম, ১৪ টি পাতি সরালি, ১টি পাহাড়ি ময়না, ১টি টিয়াসহ দেশী ও অতিথি বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি পাখি উদ্ধার করা হয়। পাখি বিক্রেতা আনিছুর রহমানকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়। এবং আজকে রাবি ক্যাম্পাসে সেগুলোকে অবমুক্ত করা হয়।

ডীপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের রাবি শাখার রেসকিউয়ার
মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, পাখিরা আমাদের মতোই প্রকৃতির অংশ, পাখিরা মুক্ত থাকলে প্রকৃতি ভালো থাকবে। ভালো থাকবে প্রকৃতি মায়ের সকল সন্তান। আমাদের সকলের উচিৎ প্রকৃতি সংরক্ষণে কাজ কর

ডিপ ইক্যুলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের রাবি প্রতিনিধি মিজানুর রহমান তাসিব বলেন, পাখি আমাদের সম্পদ। রাবিতেও অনেক প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য, আজকাল ক্যাম্পাসে পাখির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। যার মূল কারণ পাখির আবাসস্থল ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়া এবং পুকুর ও আশেপাশের পরিবেশ নষ্ট করে মাছ চাষ করা। এসব ব্যাপারে প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে। তাহলেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার আগের মতো পাখির কলকাকলীতে ভরে উঠবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মোঃ সরোয়ার হোসেন খান,
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এম সালেহ রেজা ও নজরুল ইসলাম, পাখি উদ্ধারকর্মী মো. নাজমুল হোসেনসহ অন্যন্য সদস্যরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি পাখি অবমুক্ত

আপডেট সময় : ০১:৪৭:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ নভেম্বর ২০২২

মনির হোসেন মাহিন,রাবি প্রতিনিধি:

বিক্রেতার কাছ থেকে ত্রিশটি পাখি উদ্ধারের পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাসে অবমুক্ত করেছে বন বিভাগ। বুধবার( ০৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান পাখিগুলো অবমুক্ত করেন।

রাবি শিক্ষার্থী ও বন বিভাগ সূত্র জানায়,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষার্থী তারা হলেন রাবি শাখা ডিপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশন নামের সংগঠনের রাবি ক্যাম্পাস এম্বাসাডর মিজানুর রহমান তাসিব ও মার্কেটিং বিভাগের মোঃ নাজমুল হোসেন( স্নেক ও এনিমেল রেসকিউয়ার)। তাদের সাথে ছিলেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী ইউনিট। আনিছুরের কাছে পাখি আছে জানতে পেরে রাবি শিক্ষার্থী নাজমুল পাখি কেনার কথা বলে যোগাযোগ করেন। এক পর্যায়ে নাজমুল ওই পাখি শিকারিকে দেখা করতে বললে তিনি রাজি হয় এবং তাকে ঠিকানা দিয়ে দেয়। সেই অনুসারে নাজমুল একটি মোটরসাইকেল যোগে দিয়ে বিক্রেতার অবস্থানে যায়। এসময় পেছন থেকে তাকে অনুসরণ করে বনবিভাগের কর্মকর্তা ও ডিবি লোকজন।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) নাটোরের আহম্মেদপুর থেকে অসাধু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩০টি পাখি উদ্ধার করা হয়। এসময় পাখি বিক্রেতা আনিছুর রহমানকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়। পরে নাটোর সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জোবায়ের হাবিব তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আনিছুর আহম্মেদপুর চর তেবাড়িয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম এর ছেলে।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আহম্মদ নিয়ামুর রহমান বলেন, রাজশাহী বনবিভাগের অধীনে প্রায় ১৬টি জেলার কার্যক্রম চালাতে হয়। তারমধ্যে শুধু রাজশাহীতেই অফিস রয়েছে। তাই সব জেলার এলাকাগুলোতে বন বিভাগের একার পক্ষে এই অল্প জনবল দিয়ে বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করা মুশকিল। তাই আমাদের এই কার্যক্রমকে সচল রাখতে শিক্ষার্থীদের সেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের! বিকল্প নেই। রাবির এই শিক্ষার্থীরা শুরু থেকেই এসব বন্যপ্রাণী কেনাবেচা রোধে আমাদের সাথে কাজ করে আসছে। তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। সবারই উচিত এগিয়ে আসা যেনো বন্যপ্রাণীগুলো প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে বেচে থাকতে পারে।

রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাটোর শহরের আহম্মেদপুর চর তেবাড়িয়া এলাকায় ক্রেতা সেজে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুটি কালিম, ১৪ টি পাতি সরালি, ১টি পাহাড়ি ময়না, ১টি টিয়াসহ দেশী ও অতিথি বিভিন্ন প্রজাতির ৩০টি পাখি উদ্ধার করা হয়। পাখি বিক্রেতা আনিছুর রহমানকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়। এবং আজকে রাবি ক্যাম্পাসে সেগুলোকে অবমুক্ত করা হয়।

ডীপ ইকোলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের রাবি শাখার রেসকিউয়ার
মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, পাখিরা আমাদের মতোই প্রকৃতির অংশ, পাখিরা মুক্ত থাকলে প্রকৃতি ভালো থাকবে। ভালো থাকবে প্রকৃতি মায়ের সকল সন্তান। আমাদের সকলের উচিৎ প্রকৃতি সংরক্ষণে কাজ কর

ডিপ ইক্যুলজি এন্ড স্নেক রেসকিউ ফাউন্ডেশনের রাবি প্রতিনিধি মিজানুর রহমান তাসিব বলেন, পাখি আমাদের সম্পদ। রাবিতেও অনেক প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য, আজকাল ক্যাম্পাসে পাখির আনাগোনা কমে যাচ্ছে। যার মূল কারণ পাখির আবাসস্থল ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়া এবং পুকুর ও আশেপাশের পরিবেশ নষ্ট করে মাছ চাষ করা। এসব ব্যাপারে প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে। তাহলেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার আগের মতো পাখির কলকাকলীতে ভরে উঠবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মোঃ সরোয়ার হোসেন খান,
প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এম সালেহ রেজা ও নজরুল ইসলাম, পাখি উদ্ধারকর্মী মো. নাজমুল হোসেনসহ অন্যন্য সদস্যরা।