ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে// রাবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০৭:২৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২২
  • / ৯৬০৮ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি॥

সারা দেশে চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে ‘জালালাবাদ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন তারা।

এসময় ‘বৈষম্য নিপাত যাক ৩০০ টাকা মজুরি পাক’, ‘চা শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি মানতে হবে’, ‘রুটি রুজির দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘চা শ্রমিকদের পেটে যদি না থাকে ভাত, দেশের অর্থনীতি হবে কুপোকাত’, ‘বাঁচাতে হলে দেশের অর্থনীতি বাড়াতে হবে চা-শ্রমিকদের মজুরি’ এমনসব বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ জানান।

এসময় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ এম কামিল আহমেদের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত সিলেটি শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘জালালাবাদ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন‘ এর সভাপতি মহিবুল হাসান রনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে একটি পরিবার তো দূরের কথা একজন ব্যক্তিরও খাদ্য ও বস্ত্রের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না।

সেখানে বাকি মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের আশা তো চা শ্রমিকদের জন্য দুঃস্বপ্ন। অথচ ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা বাগানের মালিকপক্ষের সঙ্গে ১২ দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল আসেনি। বাধ্য হয়ে ১১ দিন ধরে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণী গুপ্তা বলেন, বাংলাদেশে সকল দ্রব্যের দাম ও বেতন ভাতা বাড়লেও বাড়ছে না শুধু চা শ্রমিকদের মজুরি। চা শ্রমিকরা সকল ক্ষেত্রেই অবহেলিত হচ্ছে। বর্তমানে সময়ে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কি হয়? আমি নিজে একজন চা শ্রমিকের মেয়ে আমি জানি তাদের কষ্ট। কিভাবে কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসতে হয়েছে তা শুধু আমি ও আমার পরিবার জানে। চা শ্রমিকরা একমুঠো ভাত জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

তাদের নিজস্ব জমির অধিকারটুকুও নেই। মালিকপক্ষ তাদের দাবিগুলো মানতে রাজি নই। বর্তমান সময়ে চা শ্রমিকদের মতো অসহায় কেউ নেই। আমরা তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে আজকে অবস্থান কর্মসূচিতে দাড়িয়েছি।

চা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে জালালাবাদ স্টুডেন্স এসোসিয়েশনস এর সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দাশ বলেন , আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে চায়ের অবদান অনেক বেশি। কিন্তু চা শ্রমিকদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়না। রীতিমতো ন্যায্য অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে মাত্র ১২০ টাকায় সংসার চলেনা।

মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। তারা যে দাবি করেছে সেই দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। তাই মালিক পক্ষকে বলবো কোনো অজুহাত না দেখিয়ে অনতিবিলম্বে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক।

এসময় শিক্ষার্থীরা মালিকপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের দাবি বেশি না মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি চায়। যারা চা বাগানের মালিক তাদের পরিবারের খবর নিয়ে দেখবেন তারা একেকজন শত কোটি টাকার মালিক। এই শত কোটি টাকা এসেছে এই চা বাগানের শ্রমিকদের রক্তকে ঘামের শ্রমের ফলে। তারা বেশি টাকা চায়নি, তাদের দাবি মেনে নিন।

এই শ্রমিকেরা যদি আন্দোলন শুরু করে, তারা যদি কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে শত কোটি টাকা থেকে আপনাদের ফকির বানাতে বেশি সময় লাগবে না। বর্তমান সময়ের জীবনযাপনের উপযোগী ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও চা মালিকেদের প্রতি আহবান জানান তারা। এসময় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

http://এইচ/কে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে// রাবি শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি

আপডেট সময় : ০৭:২৪:৩৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২২

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি॥

সারা দেশে চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৭ আগস্ট) বেলা ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে ‘জালালাবাদ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করেন তারা।

এসময় ‘বৈষম্য নিপাত যাক ৩০০ টাকা মজুরি পাক’, ‘চা শ্রমিকদের ৭ দফা দাবি মানতে হবে’, ‘রুটি রুজির দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’, ‘চা শ্রমিকদের পেটে যদি না থাকে ভাত, দেশের অর্থনীতি হবে কুপোকাত’, ‘বাঁচাতে হলে দেশের অর্থনীতি বাড়াতে হবে চা-শ্রমিকদের মজুরি’ এমনসব বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিবাদ জানান।

এসময় ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও সংগঠনটির কোষাধ্যক্ষ এম কামিল আহমেদের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নরত সিলেটি শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘জালালাবাদ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন‘ এর সভাপতি মহিবুল হাসান রনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে একটি পরিবার তো দূরের কথা একজন ব্যক্তিরও খাদ্য ও বস্ত্রের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না।

সেখানে বাকি মৌলিক অধিকারগুলো পূরণের আশা তো চা শ্রমিকদের জন্য দুঃস্বপ্ন। অথচ ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা বাগানের মালিকপক্ষের সঙ্গে ১২ দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল আসেনি। বাধ্য হয়ে ১১ দিন ধরে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণী গুপ্তা বলেন, বাংলাদেশে সকল দ্রব্যের দাম ও বেতন ভাতা বাড়লেও বাড়ছে না শুধু চা শ্রমিকদের মজুরি। চা শ্রমিকরা সকল ক্ষেত্রেই অবহেলিত হচ্ছে। বর্তমানে সময়ে ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কি হয়? আমি নিজে একজন চা শ্রমিকের মেয়ে আমি জানি তাদের কষ্ট। কিভাবে কষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসতে হয়েছে তা শুধু আমি ও আমার পরিবার জানে। চা শ্রমিকরা একমুঠো ভাত জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

তাদের নিজস্ব জমির অধিকারটুকুও নেই। মালিকপক্ষ তাদের দাবিগুলো মানতে রাজি নই। বর্তমান সময়ে চা শ্রমিকদের মতো অসহায় কেউ নেই। আমরা তাদের সাথে সংহতি জানিয়ে আজকে অবস্থান কর্মসূচিতে দাড়িয়েছি।

চা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জানিয়ে জালালাবাদ স্টুডেন্স এসোসিয়েশনস এর সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দাশ বলেন , আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরাতে চায়ের অবদান অনেক বেশি। কিন্তু চা শ্রমিকদের কোনো মূল্যায়ন করা হয়না। রীতিমতো ন্যায্য অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে ঊর্ধ্বগতি তাতে মাত্র ১২০ টাকায় সংসার চলেনা।

মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। তারা যে দাবি করেছে সেই দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি। তাই মালিক পক্ষকে বলবো কোনো অজুহাত না দেখিয়ে অনতিবিলম্বে তাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক।

এসময় শিক্ষার্থীরা মালিকপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাদের দাবি বেশি না মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি চায়। যারা চা বাগানের মালিক তাদের পরিবারের খবর নিয়ে দেখবেন তারা একেকজন শত কোটি টাকার মালিক। এই শত কোটি টাকা এসেছে এই চা বাগানের শ্রমিকদের রক্তকে ঘামের শ্রমের ফলে। তারা বেশি টাকা চায়নি, তাদের দাবি মেনে নিন।

এই শ্রমিকেরা যদি আন্দোলন শুরু করে, তারা যদি কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে শত কোটি টাকা থেকে আপনাদের ফকির বানাতে বেশি সময় লাগবে না। বর্তমান সময়ের জীবনযাপনের উপযোগী ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ এবং স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও চা মালিকেদের প্রতি আহবান জানান তারা। এসময় প্রতিবাদ কর্মসূচিতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

http://এইচ/কে