দারিদ্র্যের বিমোচন করবো, এক সঙ্গে আগামী গড়বো
- আপডেট সময় : ০১:৫০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
- / ৯৬৩২ বার পড়া হয়েছে
ফারজানা রহমান সম্পা।
যাদের দু-বেলা নুন আনতে পানতা পুরায় তাদের কাছে সুকান্ত ভট্টাচার্যের সেই উক্তি যেনো এক কঠিন সত্য-“ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমা-চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”।
দরিদ্র্যতা একটি বহুমাত্রিক অর্থনৈতিক সমস্যা। বাংলাদেশে যা ক্রমান্বয়ে একটি অভিশাপে রূপ নিচ্ছে। দরিদ্রতা নামক অভিশাপের বিমোচন দিবস আজ।জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ১৭ অক্টোবর দিবসটি পালন করা হয়। ১৯৯৩ সাল থেকে বিভিন্ন দেশ দিবসটি পালন করে আসছে।
দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও মানুষের মাঝে অসমতা দূর করাই এর মূল লক্ষ্য। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো- ‘দারিদ্র্যের অবসান, আমাদের পৃথিবী এবং সবার প্রতি সম্মান,এক সঙ্গে গড়ি আগামী’ এই প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি। বাংলাদেশের জন্য এই দিবসটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা তথা এসডিজি’র প্রথম লক্ষ্যই হলো দারিদ্র্য বিমোচন।
একজন ব্যক্তি তার অর্জিত আয় দিয়ে দৈনিক ন্যূনতম ২২শ ক্যালরি পর্যন্ত খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের সামর্থ্য থাকলে তাকে দারিদ্র্যমুক্ত বলা হয়। এর কম খাদ্য খেলে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে বলে ধরা হয়। একই সঙ্গে ১৮শ ক্যালরির কম হলে অতি দরিদ্রের তালিকায় বিবেচনা করা হয়।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী-আসমা সিদ্দিকী অমি বলেন, সমাজদেহ থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ দূর করতে হলে সরকারকে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যেমন,কৃষি উন্নয়ন, কৃষকদের যথাযথ মূল্যায়ন,শিল্পোন্নয়ন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ ব্যাবহার,শিক্ষা বিস্তার, বেকার সমস্যা সমাধান, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ইত্যাদি। তবেই আমরা একটি দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবো।
করোনার কারণে গত বছর ১২ কোটি মানুষের জীবন যাত্রার মান দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে অনিশ্চয়তা বিশ্বব্যাপী বৈষম্য আরও বাড়াতে পারে।
১৯৯৫ সালকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ বর্ষ ঘোষণা করে।দারিদ্র্য দূরীকরণের বিষয়গুলোকে সমাধান করতে হবে সমন্বিতভাবে। এ কৌশলের লক্ষ্য হবে টেকসই জীবনযাত্রার জন্য সবাইকে সহায়তা প্রদান, আয় বৃদ্ধি, সম্পদের স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ ও এনজিও এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে মানবসম্পদ উন্নয়নের নীতি গ্রহণ।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সি এস ই) বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল মুসাব্বিয়া ফারিয়া বলেন- “বেকারত্ব হার বৃদ্ধি দারিদ্র্যের প্রধান কারন।দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব একই মুদ্রার এপিঠ -ওপিঠ। তাই শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও প্রযুক্তির প্রয়োগ অনেকাংশে দারিদ্র্যের হার কমাতে সাহায্য করে।”
দারিদ্র্য মানবজীবনের এক অভিশপ্ত যন্ত্রণা। দারিদ্রের দুঃসহ দহনে মানুষের স্বভাবিক সুন্দর জীবনধারা ব্যাহত হয়ে পড়ে, দারিদ্র্যের দৌরাত্মে মানুষের স্বপ্ন ও আশা অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়ে যায়।একটি দেশের উন্নয়নে দারিদ্র্য সমস্যা প্রধান অন্তরায়। দেশের সচ্ছলতা তখনই আসবে যখন দারিদ্র্য বিমোচন করা সম্ভব হবে। তাই সবার আগে দারিদ্র্যের কারণগুলো বের করে তার প্রতিকার করা প্রয়োজন।
অসাধারণ বাস্তব লেখনী