ব্রেকিং নিউজ ::
বাংলাদেশের বার্তার “সাহিত্য কন্ঠ”
বাংলাদেশের বার্তা
- আপডেট সময় : ০১:৪৩:০৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০২২
- / ৯৯৫৫ বার পড়া হয়েছে
- ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন
মোঃ আব্দুল্লাহ-আল-মাহতাব খান
- ভাই বন্ধু শৈশবের স্মৃতি
মনে পরে কি! সেই সে প্রীতি।
হাতেখড়ি আর অংক বিদ্যা
সহজ করতে ভাইয়ের চেষ্টা।
বছর শেষে ফল দেখে তাই
আমার চেয়েও খুশি। - মায়ের বকুনি বাবার শাসনে
ভাই ছিল মোর কষ্ট লাঘবে,
যত অনুযোগ তারই কাছে
সেই কথা কি! আছে আজও মনে?
পাড়ার যত দুষ্ট ছেলে
পারেনি কভু চোখ রাঙাতে
ভাই যে আমার সদাই পিছে
জানতো সবাই সদা ভীত মনে।
আগলে রেখেছে যে ভাই মোরে
তার কথা কি, আছে আজও মনে?
কষ্টের আয়ে স্বপ্নে আমি
সংকটে তারে কাছে পেয়েছি,
হয়েছি সফল এ ধরাধামে
তার কথা কি! আছে আজও মনে ?
ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন
নেই আজ মোর, তাকে প্রয়োজন?
যে সদা রাখে ভাই’কে স্মরণে
সেই তো মানুষ খোদার আরশে।
- মানুষ যদি হতে চাও
কবির হোসাইন
- মানুষ যদি হতে চাও
শুনতে হবে কথা,
আগের দিনের কুসংস্কার
ভূলতে হবে প্রথা।
মানুষ যদি হতে চাও
থাকতে হবে জ্ঞান,
কুরান হাদিসের দিকে
থাকতে হবে ধ্যান।
মানুষ যদি হতে চাও
বিবেক থাকতে হবে,
মন্দ কাজ নির্মূল করে
ভালো কাজে সবে।
মানুষ যদি হতে চাও
বলতে হবে সত্য,
মানুষ যদি হতে চাও
জাগাও মনুষ্যত্ব।
মানুষ যদি হতে চাও
আচরণ হবে ভালো,
তিমির কেটে ধরার বুকে
আনবে হেরার আলো।
- মায়ের হাসি
সৈয়দুল ইসলাম
- মা’ জননীর চন্দ্র হাসি
দেখলে জুড়ায় প্রাণ,
ফুলের মতোই মায়ের হাসি
ছড়ায় মধুর ঘ্রাণ।
মায়ের হাসির নেই তুলনা
যতোই হাসি ভাই,
জগত জুড়ে মায়ের হাসির
ঊর্ধ্বে যে হয় ঠাঁই।
মা’র হাসিতে মুক্তো ঝরে
ফুলফলে দেয় সাড়া,
একমূহুর্ত ভালো লাগেনা
মায়ের হাসি ছাড়া।
দুঃখ কষ্টে যতোই থাকি
দেখলে মায়ের মুখ,
দূর হয়ে যায় দুঃখ ব্যথা
পাই ধরণীর সুখ।
- ফিরবে না জানি
আজাদ হোসেন
- রাত্রি জাগি আজও আমি
প্রতিদিনই,
আমার মনের ভালোবাসা
আমি চিনি,
কার বাগানে ফুটাও গো ফুল
আমি জানি,
তোমার আশায় এই দু’চোখে
ঝরাই পানি।
জানি তুমি ফিরবে না’তো
আমার পানে,
তোমায় কত ভালোবাসি
হৃদয় জানে।
ভালোবাসি বাসবো ভালো
তোমায় আমি,
এই জীবনটা তুচ্ছ আজই
তুমিই দামি।
ভালো থেকো সুখে থেকো
অন্য বুকে,
ভালো আছো শুনে আমি
থাকবো সুখে।
- সময়ের সাথে,
প্রিয়াংকা নিয়োগী
পুন্ডিবাড়ী,ভারত,
- সময়ের সাথে বদলায় অনেক কিছু,
বদলে যায় মানুষের চিন্তাভাবনা,
পরিবর্তনশীলতার ধারা বেয়ে,
কখনও আপন পর হয়।
মিনিটের হিসাবে বদলে যায় ভাবমূর্তি,
হিংসার বেড়াজালে।
কখনও অচেনা মানুষ চেনা হয় খুব সহজে,
দিয়ে দেয় সেরা সম্মানটুকু যা আকাঙ্ক্ষার বাইরে।
বৈজ্ঞানিক ভাবনার সমারোহে,
পাল্টেছে যুগ প্রযুক্তির তৎপরতায়,
এগোচ্ছে মানুষ রেষারেষির ভাবনায়।
কিছু মানুষ ব্যস্ত আজ হিংসার আগুণ নিভিয়ে,
মানবতা সহযোগিতার বীজ বুনতে,
বিশ্বাস তাদের সময়ের সাথে হিংসা মুক্ত
সুন্দর মানসিকতার পৃথিবী গড়বে।
- দেশপ্রেমিক
মোঃ আবুল হোসেন - হে মহান নির্ভীক দেশ প্রেমিক
কিংবদন্তি বীর,
হুংকার দিয়ে জেগে ওঠো তুমি
উঁচু করো তোমার শির।
সংগ্রামে উত্তাল সাতই নভেম্বর
আগত মোদের দ্বারে,
শ্রমজীবী জনতা সিপাহী ভ্রাতা
তোমাকে চায় বারে বারে।
ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে
৬৫ সালের যুদ্ধকালে,
শত্রুকে পরাস্ত করেছিলে তুমি
স্বীয় রণ কৌশল বলে।
৭১ সালে দেশ মাতৃকার
ঘোষণা দিলে স্বাধীনতা,
রাজনীতিকেরা পালিয়ে গেল
তুমি ছিলে দেশের ত্রাতা।
ছাত্র জনতা যুদ্ধ করল
তোমার আহবানে,
পাক সেনারা হার মানল
মুক্তিযোদ্ধার সনে।
দেশমাতৃকার সব বিপদে
আবির্ভূত হয়েছো তুমি,
নিপীড়িত জনতার ত্রাণকর্তা
পেয়েছে জন্মভূমি।
শ্রমিকের জিয়া হাল ধরো আবার
জনগণ অসহায়,
পুর্ব আকাশে রক্তিম আভা
জয় তোমার সুনিশ্চয়।
- বিজয় মালা পড়বো
আকতারুজ্জামান তালুকদার-শেরপুর
- সরল পথে চলবো সবাই
সরল পথে চলবো,
আসবে যত বাঁধা-বিপদ
দু’পায়ে সব দলবো।
সরল পথে চলতে গেলে
শত বিপদ আসবো,
শত বাঁধার সিঁড়ি ভেঙে
বিজয় মালা পড়বো।
- হিমেল বায়ুর আদর
হোসাইন সজীব
- হেমন্ত যে এলো ধরায়
শীতের ছোঁয়া নিয়ে,
হিমেল বায়ু দেহ জুড়ায়
প্রাণে শান্তি দিয়ে।
শিশির ঘেরা দূর্বা-ঘাসে
মিষ্টি ভানু হাসে,
কৃষাণ মনে স্বপ্ন চাষে
চলছে তারি পাশে।
গন্ধরাজ, মল্লিকারা
সুখের পেখম মেলে,
সৌরভের মোহনীয়তা
সর্ব প্রাণে খেলে।
বাঁশপাতি যে ডাকছে সুরে
স্বাগত শীত বলে,
পরিযায়ীরা হৃদয় জুড়ে
সুখ ছড়িয়ে চলে।
হিমেল বায়ু কুয়াশা সনে
আদর বিলি করে,
সুখী পরশে সকল মনে
প্রেমের গীত ধরে।
সাংবাদিকতার সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশের বার্তা
- ছোট গল্প
- আশীর্বাদ
এমেশ চি সত্যেন চাক-নাইক্ষ্যংছড়ি, বান্দরবান।
- ডুবন্ত বেলা। প্রকৃতির উপর আর সূর্যের আলো নেই। এখুনি অন্ধকার ছেঁয়ে যেতে পারে।বাপ বেটি দুজনই পায়ে হেঁটে ঘরে ফিরছে। মেয়েটার বয়স পাঁচে ছুঁই ছুঁই এখনো। বাবার হাত ধরেই এগোচ্ছে মেয়েটি। সরু পাহাড়িয় পথ। বড় আঁকা বাঁকা। উঁচু-ঢালু পথ। পথের কোথাও গর্ত হয়ে আছে। এ গর্তগুলো গেল বর্ষারই বনে খরস্রোতের সাক্ষী রেখে যায়।
চড়াই পাহাড়িয় পথে আলো ছাড়া পথ চলা বরাবরই কঠিন।
এমন পরিবেশে বাঁচতে হলে সর্বাঙ্গে একটা দারুণ ছন্দ থাকা লাগে! ছন্দ ছাড়া তাড়াহুড়ো হয়ে হাঁটার চেষ্টা করলে অকষ্মাৎ আছাড় খেয়ে হা-পা ভাঙ্গার সম্ভাবনা থেকে যায়। - – বাবা!
– কী মা!
– চুপ চুপ, তুমি কি খেয়াল করছো না বাবা? হাতের ইশারায় দেখায়।
– হয়ছে তা কি! বিষ্ময়ভাব পিতার।
_উঁফ, আস্তে বলো! বাবা তুমি আস্তে হাঁটতে পারো না! তোমার পায়ের শব্দে ছোট পাখিদের ঘুম নষ্ট হচ্ছে। ওই ঝোঁপের আড়াল থেকে বুলবুলি পাখিটা উড়ে গেলো। তুমি কি তা দেখতে পেলে? মনে হয় আমাদের ভয়ে এটি উড়ে গেছে। - – অ! ঠিক আছে মা! তাই হবে।
_বাবা, তুমি হাতটা অত নড়াচড়া কেন করো।
বুনোঘাসে-লতায়-পাতায় তোমার হাত লেগে টান লাগবে। এতে বনের পোকামাকড় এর সমস্যা হয়। এদের ধ্যান ভাঙে। এছাড়াও কত রকমের অসুবিধে হয়ে থাকতে পারে। তুমি শুধু আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখ। এ মুহুর্তে মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে আমার। ও বাবা, এ সময়েও কি আমার মা ঘুমিয়ে আছে? মা কি দিনেও একবারও জেগে উঠেনি? মনের ভেতর আমার কেমন না জানি করছে! বাবা, বাকী পথটুকু তুমি আমায় কোলে নিয়ে চলো। শ্রীঘ্রই বাড়িতে পৌঁছে যে আমাকে মায়ের জন্য মন্দিরে বাতি জ্বালাতে হবে। পানি উৎসর্গ করতে হবে।
অ, বাবা! তুমি চুপ করে আছো কেন! জবাবে মেয়েটির বাবা বলে ওঠে,
– হুম, মা,, কত কিছু যে করার বাকী রয়ে গেছে আমাদের। তুমি আমার কোলে ওঠো। চলো তাড়াতাড়ি ফিরে যাওয়া যাক। - এতটুকু ছোট্ট মেয়ে। অথচ সে আজকাল অনেক কিছু বুঝতে পারে। বুকের কাছে কোলে ওঠে নিজেকে বাবার গলায় শক্ত করে জড়িয়ে রাখে। বাবার চোখ থেকে বেরিয়ে আসা দুই তিন ফোঁটা জল সে নিজের হাতে মুছে নেয়। মেয়েটার বাবার বয়সও এখনো মাত্র তিরিশ ছুঁয়েছে। এই বয়সে মেয়েটা হারায়েছে মাকে আর পিতা হারায়েছে ধর্মিনীকে।
- এখানে আমি শুধুই নিষ্ক্রিয় দর্শক। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে গল্প কথক হয়ে ভাবছি, জীবনের শেষ অব্দি গিয়ে এই বাপ-বেটির একত্রে থাকা হবে তো। জীবনের গতি যে কারোর বালাই বয়সের চেয়েও দুরন্তপনার। মানুষের জীবন যে সমুদ্রের ঢেউয়ের চেয়েও দুর্বোধ্যের। এ দুনিয়ার কোন কিছুকেই আগাম করে বলা যায় না। আমি এমনও দেখেছি, একজন বিধবা মহিলা চেষ্টা করে নিজেকে এবং এক হালি সন্তানেরে নিয়ে তাদের বাবার অভাব মিটাতে পারে। কিন্তু একজন পত্নীহারা পুরুষ নিজেকে ঠিক রাখতে এবং তার একমাত্র সন্তানের জন্যও মায়ের অভাব পুরণ করতে ব্যর্থ হয়। এজন্যই বোধহয় মা শব্দটা পৃথিবীতে এতই পবিত্র । তাই বাবা শব্দটি পৃথিবীতে শুধুই ব্যাখাহীন একটা নিপীড়িত শব্দ। নিষ্ক্রিয় দর্শক আমি এটা পারি। আমি বুক ভরে আশীর্বাদ করি, শেষ পর্যন্ত এই বাপ-বেটির ভালোবাসায়
যেন কোন কাঁটা না লাগে। এদের আগামীর পথচলায়
পিচ ঢালা পথেরই মত সহজতর হোক। তোমাদের জন্য এক পৃথিবীর নিঃস্বার্থ ভালোবাসাময় অনুভূতি রেখে গেলাম। কারণ, যে কেউ নিঃস্বার্থ ভালোবাসলেই আরও সুন্দর হয় এই পৃথিবী।
মোহাম্মদ আফজাল হোসেন মাসুম
সাহিত্য সম্পাদক
বাংলাদেশের বার্তা
sampadok.afjal@gmail.com