ঢাকা ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ ::

নীলফামারীতে

অবিবাহিত তরুণীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা নেন চেয়ারম্যান 

ওয়াহেদুজ্জামান শেফা
  • আপডেট সময় : ০৮:১৯:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৯৬৪৩ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নীলফামারীর ডিমলায় ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ কয়েকটি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। তবে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নে দুই শতাধিক নারীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড অনুমোদন দেন ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি কার্ড করা হয়েছে অবিবাহিত, সদ্য বিবাহিত ও ভুয়া নাম-ঠিকানায়। যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা কার্ডের কথা জানেন না। আর টাকা উত্তোলনে যে মোবাইল নম্বরগুলো ব্যবহার হয়েছে সেগুলো আছে বন্ধ। অভিযোগ আছে, ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ৩০ সুবিধাভোগীর নামে ৩ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র।

মাতৃত্বকালীন ভাতা হয়েছে এক তরুণীর নামে। অথচ অবিবাহিত ওই শিক্ষার্থীসহ সেটি জানে না তাঁর পরিবার। এ নিয়ে বিপাকে পরিবারটি। জানতে চাইলে ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘মেয়ের মাতৃভাতা হলে আমি জানতাম, আমার পরিবারের কেউ না কেউ জানতো। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না।’

মাতৃত্বকালীন ভাতায় নাম আসা ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘হুট করে আমি জানতে পারি আমার নামে মাতৃভাতার কার্ড করা হয়েছে। আমি তো অবিবাহিত, আমার সাথে কেমনে কী হইলো! এই বিষয়ে আমার ফোনে টাকাও আসে না।’এ ছাড়া ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর-কাবিখা প্রকল্প এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মেম্বার এবং চেয়ারম্যান আমার নাম কাটি দেয়, তারা টাকা বেশি চায়, ৩০ হাজার টাকা চায়।’

মন্দিরের কাজ নিয়ে একজন বলেন, ‘আমরা মন্দিরের কাজের ২ লাখ টাকা পাই নাই। এখানে কোনো টাকা আমাদের দেয় নাই, আমরা জানিও না। ওরাই খরচ করছে, ৫০-৫৫ হাজার টাকার বেশি খরচ করে নাই।’তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমার জানামতে কোনো অপকর্ম হয় নাই। সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভুয়া। আমাকে হেয় করার জন্য আমার প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নীতিমালা আছে, ব্যত্যয় হলে তা বাতিল হবে। আর টিআর কাবিখার টাকা যথাযথ ব্যবহার না করলে কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওয়ায় আনা হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

নীলফামারীতে

অবিবাহিত তরুণীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা নেন চেয়ারম্যান 

আপডেট সময় : ০৮:১৯:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

নীলফামারীর ডিমলায় ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ কয়েকটি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ইউপি চেয়ারম্যান। তবে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী ইউনিয়নে দুই শতাধিক নারীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড অনুমোদন দেন ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি কার্ড করা হয়েছে অবিবাহিত, সদ্য বিবাহিত ও ভুয়া নাম-ঠিকানায়। যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা কার্ডের কথা জানেন না। আর টাকা উত্তোলনে যে মোবাইল নম্বরগুলো ব্যবহার হয়েছে সেগুলো আছে বন্ধ। অভিযোগ আছে, ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ৩০ সুবিধাভোগীর নামে ৩ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র।

মাতৃত্বকালীন ভাতা হয়েছে এক তরুণীর নামে। অথচ অবিবাহিত ওই শিক্ষার্থীসহ সেটি জানে না তাঁর পরিবার। এ নিয়ে বিপাকে পরিবারটি। জানতে চাইলে ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘মেয়ের মাতৃভাতা হলে আমি জানতাম, আমার পরিবারের কেউ না কেউ জানতো। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না।’

মাতৃত্বকালীন ভাতায় নাম আসা ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘হুট করে আমি জানতে পারি আমার নামে মাতৃভাতার কার্ড করা হয়েছে। আমি তো অবিবাহিত, আমার সাথে কেমনে কী হইলো! এই বিষয়ে আমার ফোনে টাকাও আসে না।’এ ছাড়া ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর-কাবিখা প্রকল্প এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মেম্বার এবং চেয়ারম্যান আমার নাম কাটি দেয়, তারা টাকা বেশি চায়, ৩০ হাজার টাকা চায়।’

মন্দিরের কাজ নিয়ে একজন বলেন, ‘আমরা মন্দিরের কাজের ২ লাখ টাকা পাই নাই। এখানে কোনো টাকা আমাদের দেয় নাই, আমরা জানিও না। ওরাই খরচ করছে, ৫০-৫৫ হাজার টাকার বেশি খরচ করে নাই।’তবে অভিযোগ অস্বীকার করে খালিশা চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমার জানামতে কোনো অপকর্ম হয় নাই। সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভুয়া। আমাকে হেয় করার জন্য আমার প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নীতিমালা আছে, ব্যত্যয় হলে তা বাতিল হবে। আর টিআর কাবিখার টাকা যথাযথ ব্যবহার না করলে কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওয়ায় আনা হবে।’