ঢাকা ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ ::

বাংলাদেশ ও শেখ মুজিব পরিপূরক শব্দ: রাবি ভিসি

বাংলাদেশের বার্তা
  • আপডেট সময় : ০৫:২১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২
  • / ৯৫৯৭ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশের বার্তা অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, কৃষ্ণপক্ষের দীর্ঘতম রাত্রি অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু আজ স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। জনক আগেও জ্যোতির্ময় ছিল, এখন আরো জ্যোতির্ময়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালির হৃদয় নিংড়ানো আবেগী নাম। তিনি বলেন, এই নামের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণের ইতিহাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও শেখ মুজিবুর রহমান এই দুটি শব্দ একটি আরেকটির পরিপূরক। বঙ্গবন্ধু সতত-সমুজ্জ্বল, সর্বত্র বিরাজমান।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার আরো বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। তাই বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে আজ জাতি সোনার বাংলা বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের মহিমা ও দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মে প্রতিফলন করাই আজকের এই দিনে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

আলোচনা সভায় ‘বঙ্গবন্ধু ও আধুনিক রাজনীতি’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন বিশিষ্ট লেখক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের কারিগর।

কেননা, এই উপমহাদেশে ইংরেজদের দ্বারা যখন মানুষ পদদলিত হচ্ছিল, তখন রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য গড়ে উঠে রাজনৈতিক সংগঠন কংগ্রেস। তবে সেটাও যখন ধর্মের দ্বারা বৈষম্যে আবদ্ধ হয়ে পড়তে শুরু করল, তখন গড়ে উঠল মুসলিম লীগ।

পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে সেই ধর্মকে কেন্দ্র করেই ভারত বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠল ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র। সেখানেও ধর্মীয় বৈষম্য যখন চরমে, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঘটল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আরো বলেন, যে দেশে সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠীর সমান অধিকার থাকে না, সেটা আধুনিক রাষ্ট্র হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন এ দেশে কোনো ধরনের ধর্ম-বর্ণের বৈষম্য রাখেননি। বরং বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এমনি এক অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন বঙ্গবন্ধু।

বিশিষ্ট এ লেখক আরো বলেন, হত্যার আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে নিজ বাসভবন ছেড়ে বঙ্গভবনে অবস্থান করার অনুরোধ করেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধু হেসে উত্তর দিয়েছিলেন যে, আপনি ভুল করছেন কারণ কোনো বাঙালি আমাকে হত্যা করতে পারে না।

বাঙ্গালি জাতির ওপর বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস এমনই ছিল। কিন্তু তার সেই অগাধ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল কতিপয় বাঙালি বিশ্বাসঘাতক। সেদিন ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তার সেই বিশ্বাস ও সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক প্রমুখ।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ বিভিন্ন অনুষদ ডিন, হল প্রাধ্যক্ষ ও বিভাগীয় সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় ভিসি অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শোক র‌্যালিসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

http://এইচ/কে

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বাংলাদেশ ও শেখ মুজিব পরিপূরক শব্দ: রাবি ভিসি

আপডেট সময় : ০৫:২১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ অগাস্ট ২০২২

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, রাবি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, কৃষ্ণপক্ষের দীর্ঘতম রাত্রি অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু আজ স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। জনক আগেও জ্যোতির্ময় ছিল, এখন আরো জ্যোতির্ময়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাঙালির হৃদয় নিংড়ানো আবেগী নাম। তিনি বলেন, এই নামের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণের ইতিহাস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও শেখ মুজিবুর রহমান এই দুটি শব্দ একটি আরেকটির পরিপূরক। বঙ্গবন্ধু সতত-সমুজ্জ্বল, সর্বত্র বিরাজমান।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার আরো বলেন, ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। তাই বঙ্গবন্ধুকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে আজ জাতি সোনার বাংলা বাস্তবায়নে দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর আত্মত্যাগের মহিমা ও দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ আমাদের কর্মে প্রতিফলন করাই আজকের এই দিনে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।

আলোচনা সভায় ‘বঙ্গবন্ধু ও আধুনিক রাজনীতি’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন বিশিষ্ট লেখক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক স্বদেশ রায়। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের কারিগর।

কেননা, এই উপমহাদেশে ইংরেজদের দ্বারা যখন মানুষ পদদলিত হচ্ছিল, তখন রাজনৈতিক অধিকার রক্ষার জন্য গড়ে উঠে রাজনৈতিক সংগঠন কংগ্রেস। তবে সেটাও যখন ধর্মের দ্বারা বৈষম্যে আবদ্ধ হয়ে পড়তে শুরু করল, তখন গড়ে উঠল মুসলিম লীগ।

পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে সেই ধর্মকে কেন্দ্র করেই ভারত বিভক্ত হয়ে গড়ে উঠল ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্র। সেখানেও ধর্মীয় বৈষম্য যখন চরমে, তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঘটল স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়।

একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক আরো বলেন, যে দেশে সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠীর সমান অধিকার থাকে না, সেটা আধুনিক রাষ্ট্র হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন এ দেশে কোনো ধরনের ধর্ম-বর্ণের বৈষম্য রাখেননি। বরং বাঙালি জাতিকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এমনি এক অসাম্প্রদায়িক ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন বঙ্গবন্ধু।

বিশিষ্ট এ লেখক আরো বলেন, হত্যার আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুকে নিজ বাসভবন ছেড়ে বঙ্গভবনে অবস্থান করার অনুরোধ করেছিলেন। তখন বঙ্গবন্ধু হেসে উত্তর দিয়েছিলেন যে, আপনি ভুল করছেন কারণ কোনো বাঙালি আমাকে হত্যা করতে পারে না।

বাঙ্গালি জাতির ওপর বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস এমনই ছিল। কিন্তু তার সেই অগাধ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল কতিপয় বাঙালি বিশ্বাসঘাতক। সেদিন ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল তার সেই বিশ্বাস ও সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন, প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক প্রমুখ।

আলোচনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ বিভিন্ন অনুষদ ডিন, হল প্রাধ্যক্ষ ও বিভাগীয় সভাপতি, বিশিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে সকালে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় ভিসি অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার শোক র‌্যালিসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

http://এইচ/কে